ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

প্রচ্ছদ » পাঠকের লেখা » বিস্তারিত

পশ্চিমবঙ্গে ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ বড়ই দুর্দিন যাচ্ছে!

২০২৪ জুলাই ০৭ ১৬:২৬:০১
পশ্চিমবঙ্গে ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ বড়ই দুর্দিন যাচ্ছে!

শিতাংশু গুহ


কারা যেন বলেন যে ভারতে মুসলমানরা অত্যাচারিত? তাহলে শুনুন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এক ইসলামী জলসায় কি বলেছেন? সদ্য (জুলাই ২০২৪) কলকাতায় মেয়র ফিরহাদ হেকিম বলেছেন: ‘যারা ইসলাম ধর্মে জন্মায়নি তাঁরা দুর্ভাগ্য নিয়ে জন্মেছে, ওদের ইসলামে দাওয়াত দিলে আল্লাহ খুশি হন’। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা এজন্যে তার বাড়ীঘর পুড়িয়ে দেননি, মুসলিম পাড়ায় আক্রমন করে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়নি। পক্ষান্তরে ইসলাম অবমাননার ভুয়া অভিযোগে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অনেকগুলো সংঘঠিত আক্রমন, হত্যা, লুটপাট, মহিলাদের শ্লীলতাহানি ঘটেছে, কয়েক ডজন হিন্দু যুবক-যুবতী বিনা অপরাধে, বিনা-বিচারে জেলে পঁচছে। কাজী মাসুম আক্তার নামে কলকাতার একজন বুদ্ধিজীবী অবশ্য ফিরহাদ হাকিমকে ধুইয়ে দিয়েছেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, ফিরহাদ হেকিম তাঁর দিদি মমতা ব্যানাজীর দুর্ভাগ্য ঘটিয়ে সৌভাগ্যে এনে আল্লাহকে খুশি করতে পারেন।

দু’টি ভিডিও সাথে দিলাম। কবিগুরু নাকি একবার লন্ডনে গেলে এক বাঙ্গালী তার সাথে সারাক্ষন ইংরেজীতে কথা বলছিলেন। একটু সময় পর কবিগুরু বললেন, আপনি বাঙ্গালী, আমিও বাঙ্গালী, বাংলায় কথা বলুন না কেন? ভদ্রলোক বললেন, স্যার, দীর্ঘদিন লন্ডন থাকতে থাকতে বাংলাটা ভুলে গেছি। কবিগুরু তখন বললেন, আপনার জন্যে আমার দু:খ হয়, আপনি বাংলাটা ভুলে গেলেন, ইংরেজীটাও ঠিকমত শিখলেন না! কবিগুরুর মত কলকাতায় যদি কেউ এখন ফিরহাদ হাকিমকে বলতেন, ‘আপনার জন্যে আমার দু:খ হয়, আপনি সত্যটা জানলেন না, মিথ্যার ওপর জীবনটা কাটিয়ে দিলেন’। এই মেয়র ক’দিন আগে ‘কলকাতাকে মিনি পাকিস্তান’ বলেছেন। আর একটি ডিভিওতে মেয়র বেশ জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি অসাম্প্রদায়িক, দুর্গাপূজা ও কালীপূজা করে থাকেন (ভিডিও সংযুক্ত)। সাধারণ মানুষ অবশ্য বুঝতে অপারগ, একজন মুসলমানকে কেন কালীপূজা, দুর্গাপূজা করতে হবে?

মমতার রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে এখন ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ বড়ই দুর্দিন যাচ্ছে। সেখানে বুদ্ধিজীবীরা প্রকাশ্যে রাস্তায় গরুর মাংস খেয়ে প্রমান করছেন যে, তারা অসাম্প্রদায়িক। ফিরহাদ হাকিমকে টিভি’র সামনে বলতে হয়, আমি অসাম্প্রদায়িক, আমি কালীপূজা, দুর্গাপূজা করি। এঁরা কি বুঝেন যে এঁরা নিজনিজ ধর্মের ‘অবমাননা’ করছেন? ভোটের জন্যে, বা ব্যক্তিস্বার্থে ধর্মকে অবমাননার অধিকার এদের কে দিয়েছে? মুর্শিদাবাদের বিধানসভা সদস্য হুমায়ুন কবির লোকসভা নির্বাচনের আগে বলেছেন যে, আমরা এখানে ৭০%, হিন্দুরা ৩০% ইচ্ছে করলে আমরা হিন্দুদের কেঁটে নদীতে ভাসিয়ে দিতে পারি। আহা, একজন অত্যাচারিত মুসলমানের কথা শুনুন। রাহুল গান্ধী সংসদে বলেছেন, হিন্দুরা হিংস্র। পুরো মুসলিম বিশ্বের কোন নেতা কি একথা বলার সাহস রাখেন যে, ‘মুসলমানরা সন্ত্রাসী? মহান ভারত বলেই এটি সম্ভব। হুমায়ুন কবিরের ভাগ্য ভাল, রাহুল গান্ধীর মন্তব্য মেনে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা হিংস্র হয়ে উঠছে না।

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।