ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মিডিয়া » বিস্তারিত

খ্যাতিমান সাংবাদিক রতন সরকারের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী আজ

২০২৪ জুলাই ১৩ ১৬:০৩:৫৯
খ্যাতিমান সাংবাদিক রতন সরকারের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী আজ

ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী : তিস্তা নদীতে একটি মহাপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছিল। রতন সরকার সাংবাদিকতারও ঊর্ধ্বে উঠে বারবার চেয়েছেন—তিস্তা মহাপরিকল্পনা হতেই হবে। তিস্তা নদী উত্তরের জীবনরেখা। অথচ তিস্তাই অভিশাপে পরিণত হয়েছে। সেটিকে আশীর্বাদে পরিণত করার জন্য তাঁর নিজের চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না। রতন সরকার সর্বশেষ যে স্ট্যাটাস ফেসবুকে দিয়েছেন, সেটিও তিস্তার জন্য। তিনি তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের কয়েক শীর্ষ সংগঠকসহ ঢাকায় গিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব কবির বিন আনোয়ারের সঙ্গে মহাপরিকল্পনাবিষয়ক আলোচনা করতে। আলোচনা শেষে ফেসবুকে দেওয়া তাঁর শেষ স্ট্যাটাস—‘সর্বোচ্চ ত্যাগের শপথ আর কোটি মানুষের স্বপ্ন নিয়ে পা বাড়ালাম। দোয়া করো উত্তরের ধূলিকণা, পানি ও বাতাস”। তাঁর এই স্ট্যাটাস যে তিস্তা নদীকে নিয়েই। আজ ১৩ জুলাই। রংপুর অঞ্চলের খ্যাতিমান সংবাদিক রতন সরকারের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী।

১৩ জুলাই সকালে ঢাকায় গিয়ে ওই দিন রাত সাড়ে ১০টায় রংপুরে ফিরেছিলেন। রংপুরে বাসায় না ফিরে গাড়িতে তিনজন মিলে গিয়েছিলেন রংপুর শহর থেকে আরও প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে চওড়ারহাট নামের প্রান্তিক এলাকায়। রাত ১১টার পর সেখানে একটি বাড়ির পাশে গিয়েছিলেন প্রাকৃতিক কাজে। সেখানেই তিনি জ্ঞান হারান। সেখান থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয় অ্যাম্বুলেন্সে। তাঁর আর জ্ঞান ফেরেনি। তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই), ২০২৩ রাত সাড়ে ১২টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।

তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ফ্লাইটে ঢাকায় গিয়েছিলেন রতন সরকার। আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা কবীর বিন আনোয়ার (সাবেক কেবিনেট সচিব ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তারা বিকেলেই আবার ফিরে আসেন। সৈয়দপুর হয়ে রংপুর ফিরে সবাই একসঙ্গে চা খেতে বসেছিলেন। সে সময় রতন সরকার অসুস্থ হয়ে পরেন। পরে তিনি সন্ধ্যায় স্ট্রোক করলে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

পেশাগত জীবনে রতন সরকার সালে নীলফামারী থেকে প্রকাশিত সপ্তাহিক নীলকথা পত্রিকায় কাজ করার মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন, ছিলেন পত্রিকাটির বার্তা সম্পাদক। এরপর তিনি দৈনিক মাতৃভূমি, দৈনিক করতোয়া, রংপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক বিজলী পত্রিকায় কাজ করেন। তিনি নীলফামারী থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক রতনা পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজ,সিএসবি নিউজ, ডিবিসি ও সময় টেলিভিশনে কাজ করেন। প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে সময় টিভিতে দায়িত্ব পালন করেন রতন সরকার।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) জুমার নামাজের পর নীলফামারীর কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।

রতন সরকার সময় সংবাদের রংপুর ব্যুরো প্রধান ও বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রংপুর মহানগরীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন সিনিয়র এ সাংবাদিক। মৃত্যুকালে তিনি মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

(ওকে/এসপি/জুলাই ১৩, ২০২৪)