ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » ঘুরে এলাম » বিস্তারিত

কুয়াকাটা সৈকতে তৈরি করা বালুর ভাস্কর্যে মুগ্ধ পর্যটকরা

২০১৭ জানুয়ারি ০৬ ১৯:১৭:৩২
কুয়াকাটা সৈকতে তৈরি করা বালুর ভাস্কর্যে মুগ্ধ পর্যটকরা

মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া : পূর্ব আকাশে কুয়াশা ভেদ করে ভোরের সূর্য উদয়ের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে কুয়াকাটায় ভ্রমনে আসা পর্যটকরা এতোদিন ভীড় করলেও এখন তাঁরা ছুটছে বালুর ভাস্কর্য দেখতে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনের বালুর ভাস্কর্য এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। ভোরের সূর্যের আলোয় বালুর ভাস্কর্যগুলোর এ শৈল্পিক সৌন্দর্য আরও বিকশিত হচ্ছে। চারু শিল্পীদের নিপুন হাতে সৈকতের বেলাভূমে শূন্য পয়েন্টের পূর্বদিকে পর্যকদের অনুপ্রাণিত করতে এমন দৃশ্যপট রূপদান করা হয়েছে। এছাড়াও বালুর নিপুন কারুকাজে তুলে ধরা হয়েছে কুয়াকাটার সৌন্দর্য, ইতিহাস, সাগরপাড়ের মানুষের জীবনযাত্রা।

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে দেশি-বিদেশী পর্যটকের কাছে শৈল্পিকভাবে তুলে ধরতে কুয়াকাটায় ভিন্নধর্মী এমন উদ্যোগ দেখতে ভীড় করছে পর্যটকরা। ব্যতিক্রমী এ উদ্যেগকে স্বাগত জানিয়েছেন কুয়াকাটায় আগত পর্যটক-দর্শনার্থীসহ স্থানীয় মানুষ। আগামী ১৩, ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি কুয়াকাটায় মেগা বীচ কার্নিভাল উদযাপনকে আরও বর্ণাঢ্য করতে একদল তরুণ মেধাবী চারুশিল্পী নিপুণ হাতে বালুর ভাস্কর্য আর রং তুলির আচড়ে উপস্থাপন করেছেন এমনসব দর্শনীয় দৃশ্য।

দেশি-বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে অভজারভেশন অফ নেচার এন্ড স্টাডি প্রোগ্রামের আওতায় প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে সমুদ্র সৈকতর কুয়াকাটার এ প্রদর্শনীর ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে আরো গতিশীল ও বিকাশমান করার লক্ষ্যে পর্যটন মন্ত্রালয়, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন কুয়াকাটায় আয়োজন করে এ মেগা বীচ কার্নিভাল।

এ উৎসবকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশী পর্যটককে আরো বেশি পর্যটন আকৃষ্ট করতে ইউনিভার্সিটি অফ ডেভলপমেন্ট অলটারনেটিভ (ইউডা) এর চারুকলা অনুষদের একদল তরুন শিল্পী কুযাকাটা সৈকতে বালু ভাস্কর্য তৈরি শুরু করেছে।

কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজের সহকারি অধ্যাপক মো, ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, কক্সবাজারকে যেভাবে তুলে ধরা হচ্ছে, পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা সে তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়েই কুয়াকাটা পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে। পর্যটনকেন্দ্র এলাকা অথচ সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত উপভোগ ছাড়া এখানে নেই কোন বিনোদন মাধ্যম। তাই অবেহেলিত কুয়াকাটার দৃশ্যপট তুলে ধরার এ প্রচেষ্টা যাতে অব্যাহত থাকে তার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।

কুয়াকাটায় ভ্রমনে আসা পর্যটক ইমরান, তাওহীদ, উজ্জলা বলেন, এতোদিন কুয়াকাটায় এসে শুধু বালুতটে হাঁটা আর সাগরের ঢেউ দেখা ছাড়া আর কিছুই ছিলো না। এবার এসে দেখলাম বালুর ভাস্কর্য নির্মান করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষনের ভাস্কর্যটি সবার মন কেড়েছে। তবে এগুলো সংরক্ষন করলে পর্যটকদের ভীড় ক্রমশ বাড়বে বলে তারা জানান।

চারুশিল্পী সায়মা বলেন, এবারই কুয়াকাটায় প্রথম এসেছি। প্রকৃতি যেন তার সকল সৌন্দর্য দিয়ে সাজিয়েছে কুয়াকাটাকে। তাই বিশ্ববাসীর কাছে নৈসর্গিক সে রূপ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

ইউনির্ভাসিটি অফ ডেভলপমেন্ট অলটারনেটিভ’র চারুকলা অনুষদের চেয়ারম্যান শিল্পী শাহ্জাহান আহ্মেদ বিকাশ সাংবাদিকদের বলেন, অনুষদের ৪১ জন নবীন শিল্পী গত চার দিন ধরে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কুয়াকাটার সৌন্দর্য ও এখানকার মানুষের জীবনাচারন নিয়ে কাজ করেছে। এ কাজ চলবে মেগা বীচ কার্নিভাল শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত।

(এমকেআর/এএস/জানুয়ারি ০৬, ২০১৭)