ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » ঘুরে এলাম » বিস্তারিত

কাছে টানে নীল নদ

২০১৭ আগস্ট ১৩ ১৩:৫০:৩০
কাছে টানে নীল নদ

ভ্রমণ ডেস্ক : নীল নদ পৃথিবীর বৃহতম। ছয় হাজার ছয় শ পঞ্চাশ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদ। পৃথিবীর সমস্ত শহরের মা। ঐতিহাসিক নীল নদের দুই কূলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আধুনিক কায়রো নগরী। এখানে মনোমুগ্ধকর সুউচ্চ দালান, কারুকার্য খচিত অসংখ্য মিনার, পিরামিড, ফারাওদের বিশাল মূর্তি, অসংখ্য সুদীর্ঘ ফ্লাইওভার, প্রশস্ত রাস্তা যেকোনো পর্যটকের দৃষ্টি আর্কষণ করবেই।

পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নীল নদের দুই তীরে বিলাসবহুল ফাইভ স্টার ও থ্রি স্টার মানের হোটেল, বিনোদন কেন্দ্র, ক্লাব, পার্ক ইত্যাদি নিমার্ণ করা হয়েছে। নীল নদের ভাসমান সুসজ্জিত বিলাসবহুল প্রমোদতরীগুলো যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। মিসর সরকারের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস পর্যটন। দিনের চেয়ে রাতের আলোর ঝলমল দৃশ্য আরো বেশি দৃষ্টিনন্দন। তাই কোথাও যেন যানজট সৃষ্টি না হয় তার জন্য বিশাল রাস্তাগুলোর মধ্যে ডিভাইডার ও ওয়ান ওয়ে চলাচল ব্যবস্থা রয়েছে।

মিসরকে বলা হয় নীল নদের দান। এ নদ আসওয়ান বা প্রথম জলপ্রপাত পর্যন্ত নাব্য। নীল নদের ব-দ্বীপে অসংখ্য শাখা নদী রয়েছে। নদীর মধ্যে রসেট্টা ও ডামিয়েট্রা সবচেয়ে বড়। পৃথিবীর দীর্ঘতম নদীর মধ্যে নীল নদ হলো অন্যতম।

নীল নদ প্রায় ৪ হাজার ১১৫ মাইল আফ্রিকায় নয়টি দেশের বুরুন্ডি, রুয়ান্ডা, তাঞ্জানিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা, জায়ারে, সুদান, ইথিওপিয়া ও মিশরের মধ্যে ১১,৫০,০০০ বর্গমাইল খাতে দক্ষিণে পানি সংগ্রহ করে ৯৩৫ মাইল উত্তর মুখে প্রবাহিত হয়ে ভূমধ্যসাগরে পতিত হয়েছে। অর্থাৎ নীল নদ মিসরের দক্ষিণে ইথিওপিয়া থেকে উৎপত্তি হয়ে উত্তরে ভূমধ্যসাগরে পতিত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ বা ভারতের বেলায় ঠিক এর উল্টো অর্থাৎ উত্তরে উৎপত্তি হয়ে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে শেষ হয়।

বর্তমান মরুভূমি এখনকার অপ্রবেশ্য অরণ্য এই নীল নদ তীরবর্তী অঞ্চলেই ৫০০০ বছর পূর্বে মিসরীয় সভ্যতার উদ্ভব হয়। এই নদীর কোনো শাখা বা উপনদী মিসরে নেই। মজার কথা হলো, নীল নদের আসল নাম নীল নয়, নাইল। নাইল কবে কেন যে নীল হয়ে গেল তা জানা যায়নি। তবে সম্ভবত আকাশের নীল রঙের মতো পানির রঙ নীল দেখা যায় বলে কোনো বাঙালি কবি একে নীল নদ নামে অভিহিত করেছিলেন। চওড়ায় ঢাকার বুড়িগঙ্গা থেকে সামান্য বড় হলেও এর গভীরতা অনেক।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, আদি মিসরীয়রা নীল নদের বন্যার পানীয় উপযুক্ত ব্যবহার করে নানা ধরনের ফসল, খাদ্যশস্য, পশুখাদ্য উৎপাদনের কৌশল রপ্ত করেছিল। নীল নদের পানির ধারা পাহাড়ি প্রতিবন্ধকতাকে পেড়িয়ে ৬টি জলপ্রপাত সৃষ্টি করেছে। মিসরের সৌন্দর্যই যেন নীল নদ। লন্ডনের টেমস নদীর মতোই স্রোতস্বীনী এ নদ।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ১৩, ২০১৭)