ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » আনন্দ বেলা » বিস্তারিত

আহমেদ জাকির'র গল্প

২০১৭ সেপ্টেম্বর ২০ ১৮:৫৫:০৪
আহমেদ জাকির'র গল্প







রাজপুত্তর

রাজপুত্তর রেগে রেগে বলে, ‘খাবো না! খাবো না!’ গল্প বলে আর খিলখিলিয়ে হাসে ইরিন। ইতুও হাসে। ইরিনের গল্প শুনে কাকু এবার ঝটপট উঠে পড়ে। ইরিন আর ইতু ঘর থেকে বের হয়। ছুটে যায় দাদার কাছে। দাদা বসে
আছেন উাঠানে। দাদার দুই পাশে দাঁড়ায় দুইজন
‘কাকু, ওঠো!’
ছোট কাকুর পাশে বসে সকাল বেলা ডাকে ছোট্ট ইরিন।
‘ওঠো কাকু, ওঠো!’ ইরিনের সঙ্গে যোগ দেয় ইতু।
ইতু ইরিনের চাচাতো বোন। ইরিন বড়। ইতু ছোট। আবার দুইজনই ছোট। কারণ দুইজনের বয়সই তিন বছরের কম। তিন বছরের কম বয়সকে তো ছোটই বলা যায়। অবশ্য তারা সেটা মানে না। কারণ মাঝে মাঝেই তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়। বিশেষ করে খাওয়ার জন্য বেশি জোর করলে। কিন্তু আইসক্রিমটা তাদের বড্ড প্রিয়।
কাকু ওঠে না। কাকু অলসভাবে চোখ বুজে শুয়ে থাকে।
‘ওঠো কাকু’ কাকুর হাত ধরে টানে আর বলে ইরিন। ‘খাবে, চলো!’
‘খাবো না!’ অভিমানের সুরে বলে কাকু। যেন খেতে ডাকতে দেরি হয়ে গেছে।
‘খুব মজা হয়েছে! চলো, খাবে!’ লোভ দেখায় ইতু।
‘গল্প বললে খাবো।’ বায়না ধরে কাকু।
‘কাকু গল্প বললে খাবে’ ইরিনকে বলে ইতু।
ইতু মুখে হাত দিয়ে কাকুর পাশে বসে। মাথা চুলকায়। যেন সে এখনই একটা গল্প বলবে।
ইরিন কিছুক্ষণ জানালায় পা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এক জানালা থেকে অন্য জানালায় যায়। শেষে কাকুর কাছে এসে তার দাদুর মতো দুই পা ভাঁজ করে, আয়েশ করে বসে গল্প বলা শুরু করে ইরিন
এক ছিল রাজা।
এক ছিল রানী।
আর ছিল এক রাজপুত্তর।
রাজপুত্তর না, কিছুই খায় না। কিছুই খায় না।
কোনো কিছুই খায় না।
রানী বলে খাও! খাও!
রাজপুত্তর রেগে রেগে বলে, ‘খাবো না! খাবো না!’
গল্প বলে আর খিলখিলিয়ে হাসে ইরিন। ইতুও হাসে।
ইরিনের গল্প শুনে কাকু এবার ঝটপট উঠে পড়ে।
ইরিন আর ইতু ঘর থেকে বের হয়। ছুটে যায় দাদার কাছে। দাদা বসে আছেন উাঠানে। দাদার দুই পাশে দাঁড়ায় দুইজন।
দাদার মুখের দিকে তাকিয়ে ইরিন বলে, ‘দাদা তুমি হি হি কর। আমি হা হা করি।’
ইরিনের কথায় যেন মজা পায় দাদা। তাই বলার সঙ্গে সঙ্গে বলে, ‘হি হি হি!’ দাদার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইরিন বলে ‘হা হা হা!’ ইতুও ইরিনের সঙ্গে হা হা হা বলে।
ইতু বলায় দাদা আবার হি হি হি বলে।
দাদার মুখের দিকে তাকিয়ে ইরিন বলে, ‘কি মজার ব্যাপার!’
বলেই রান্না ঘরের দিকে দৌড় দেয়। রান্না ঘরে তাদের মা আর দাদু। রান্না ঘরে উঁকি দিয়ে উঠোনে রাখা বালুর দিকে লাফিয়ে লাফিয়ে দৌড়ে যায় ইরিন আর ইতু।
দরজায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব দেখে কাকু। আর সব দেখে খুব আনন্দ হয় তার। আর তাই সে-ও মনে মনে বলে, ‘কি মজার ব্যাপার!’