ঢাকা, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

কান্দাপাড়া পতিতা পল্লীর সাড়ে ৮’শ যৌনকর্মী এক রাতেই উধাও

২০১৪ জুলাই ১৩ ১৫:৩২:৫৮
কান্দাপাড়া পতিতা পল্লীর সাড়ে ৮’শ যৌনকর্মী এক রাতেই উধাও

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গইলের কান্দাপাড়া পতিতাপল্লীর সাড়ে ৮’শ যৌন কর্মী একরাতেই তাদের আবাসন ছেড়ে উধাও হয়েছে।

টাঙ্গাইল অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির আন্দোলন ও বড় ভাইদের মৌখিক নিদের্শেই শতাধিক বছরের নিষিদ্ধ পল্লীর যৌন কর্মীরা তাদের আবাসন ছেড়ে পালিয়েছে। এদিকে পতিতা পল্লীর ঘরবাড়ি ভাঙ্গার কাজ শুরু করে দিয়েছে ৫৬ জন বাড়ির মালিক ও সরদার্নীরা। সরদার্নীরা ও পতিতা মিলে প্রায় হাজার খানিক পতিতা এই পতিতালয়ে যৌন পেশায় নিয়োজিত ছিল। প্রায় শত বছর আগে লৌহজং নদীর তীরবর্তী এই কান্দাপাড়ায় এই পতিতা পল্লী গড়ে উঠেছিল।

এই পতিতাপল্লীকে কেন্দ্র করে প্রায় ৫ হাজার পরিবার জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো। হঠাৎ করে গত ৬ জুলাই টাঙ্গাইল অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে একটি সংগঠন টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে পতিতালয় উচ্ছেদের দাবিতে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে টাঙ্গাইল পৌর মেয়রের নিকট স্মারকলিপি দেয়। পরবর্তীতে ১১ জুলাই কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ও বেবিষ্ট্যান্ড মসজিদে পতিতালয় উচ্ছেদ কল্পে জেলার বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসা কমিটির নেতৃবৃন্দ আরো একটি সভা করেন। এর পর ১২ জুলাই রাতেই ওপরের নির্দেশে সাড়ে আটশ যৌনকর্মী তাদের বাড়িঘর ও বাসা ছেড়ে চলে যায়।

বাড়িওয়ালী হেলেনা বেগম জানান, তিন দিন আগে আমাদেরকে মৌখিকভাবে জানানো হয় পতিতা ব্যবসা বন্ধ করে এখানে অন্য ব্যবসা করতে হবে। আমার বাড়িতে ২৪টি ঘর ছিল। এখন আমি নিজ খরচে ভেঙ্গে চলে যাচ্ছি। ভাঙ্গার নিদের্শ কে দিয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি।

পতিতাপল্লীর সরর্দানী পতিতা পল্লীর সরর্দানী মিনা, আলেয়া, চান মিয়া, মান্নান, হালিম বাড়িওয়ালাসহ অনেকেই জানান, কোন প্রকার নোটিশ ছাড়া শুধু ভয় ও আতংকের চাপের মুখেই আমাদের এই ব্যবসা ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। তারা জানান, এ এলাকায় এমপি ও মেয়রদের বাড়িঘর থাকায় এখানে আমাদের রিজিক ফুরিয়ে গেছে।

পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি জানান, কান্দাপাড়ার পতিতা পল্লীর যৌনকর্মীরা চলে যাচ্ছে এ বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসে নাই।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন জানান, আমরা শুনলাম সকল যৌনকর্মীরা স্বেচ্ছায় চলে যাচ্ছে। এমন খবর পেয়ে প্রশাসনিকভাবে একটি কমিটি করে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল চলে যাচ্ছে কেন? তারা কোন কথা বলেনি।

তবে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট লাল হোসেনে নেতৃত্বে একটি টিম শনিবার সন্ধায় টাঙ্গাইল পতিতালয় পরিদর্শনে গেলে কাউকে না পেয়ে তারা চলে আসে বলে জেলা প্রশাসক জানান। তবে এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর জানান, যৌনকর্মীরা স্বেচ্ছায় চলে যাচ্ছে শুনেছি। তারা ভয়ে বা আতংকে চলে যাচ্ছে এমন কোন অভিযোগ যৌনকর্মী বা কোন সংগঠন আমাদের কাছে করে নাই। তবু যে কোন পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পতিতাপল্লী এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

(এমএনইউ/জেএ/জুলাই ১৩, ২০১৪)