ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » ঘুরে এলাম » বিস্তারিত

প্রকৃতিও আজ হাসছে পর্যটকদের সাথে

২০১৯ ডিসেম্বর ৩১ ১৮:০৭:৪২
প্রকৃতিও আজ হাসছে পর্যটকদের সাথে

মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : প্রকৃতিও আজ হাসছে কুয়াকাটায় পর্যটকের সাথে। মেলে ধরেছে তার সকল সৌন্দর্য। মৃদু বাতাসে সৈকতের নারিকেলকুঞ্জ ও ঝাউবাগানের পত্রমালাও সাগরের ঢেউয়ের সাথে দুলছে। গোটা সৈকতে জোয়ারে ভেসে আসা ছোট ছোট ঝিনুক যেন কার্পেটের মতো বিছিয়ে রয়েছে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে। সাগরের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে ভেসে বেড়াচ্ছে ছোট ছোট পর্যটকবাহী ট্রলার, লঞ্চ ও ডিঙি নৌকা। পুব আকাশকে পেছনে ফেলে সবাই ছুটছে পশ্চিম আকাশ পানে তাকিয়ে সৈকতে।

পশ্চিমের আকাশ সিঁদুর রংয়ে রাঙিয়ে একটু পর অস্ত যাবে সূর্য। স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজারো পর্যটক সৈকতের বালুকা বেলায় অপেক্ষা করছে শেষ স্মৃতি ধরে রাখতে। বিদায় জানাতে ২০১৯ সালকে। দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের মঙ্গলবার বিকালের চিত্র এটি। পর্যটকদের আগমনে গোটা সৈকত জুড়ে উৎসবের আমেজ।

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, হোটেল-মোটেলের সুবিধা ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় কুয়াকাটায় হাজার হাজার পর্যটক ও দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছে। কুয়াকাটা সৈকত ছাড়াও কুয়াকাটাগামী আন্ধারমানিক নদীর উপর নিমর্মিত শেখ কামাল সেতু, টিয়াখালী নদীর উপর নির্মিত শেখ জামাল সেতু ও শিববাড়িয়া নদীর উপর নির্মিত শেখ রাসেল সেতুর উপরও ছিল বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে মানুষের ভীড়। এছাড়া পায়রা সমুদ্র বন্দর , গঙ্গামতি সৈকত ও কাউয়ার চরে পিকনিক পার্টির কয়েক হাজার পর্যটক নতুন বছরকে স্বাগত এবং পুরাতন বছরকে বিদায় জানাতে সমাগম হয়েছে।

কুয়াকাটার হোটেল বীচ হেভেন এর ম্যানেজার মো. রঞ্জু জানান, প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহের কারনে এ বছর বাহিরের পর্যটকদের সমাগম খুবই কম। কুয়াকাটার অধিকাংশ আলীশান হোটেল-মোটেলসহ সরকারি ডাকবাংলোর কিছু কিছু রুম বুকিং হয়েছে। থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনকে ঘিরে মঙ্গলবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা সমাগম হয়েছে।

কুয়াকাটার ইলিশ পার্ক’র পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, বছরের শেষদিন উদযাপনকে ঘিরে ইলিশ পার্কে প্রতিবছরের মতো এবারও পর্যটকদের বিনোদনের জন্য রয়েছে বিভিন্ন অয়োজন। তবে এবার পর্যটক কম।

কুয়াকাটায় ভ্রমনে আসা টাঙ্গাইল কলেজ এর শিক্ষার্থী শাহরিয়ার, তিথি, তমালিকা, আদ্রিয়ান, জিয়ান জানান, তারা ৩৭ জন এসেছেন কুয়াকাটায়। এখানে তারা রাত্রিযাপনসহ ভোরের নতুন বছরের সূর্যোদয়ের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য অবলোকন করবেন। তাদের মতো দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কুয়াকাটায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা কুয়াকাটায় এসেছেন বছরের শেষ সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করতে।

কলেজ শিক্ষার্থী সায়ন্তনি. চন্দ্রা, তনময়, উজ্জল, আবির জানায়, তারা দুপুরে কুয়াকাটা এসেছেন কুয়াকাটা সৈকতের অপরুপ সৌন্দর্য তাদের মুগ্ধ করেছে। আকাশের সাথে মিতালী ও সাগরের ঢেউয়ের আলীঙ্গন তাদের সৈকতে আঁকড়ে রাখবে। এখানে বসেই উপভোগ করবেন নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয়। আগামী ভবিষৎ রচনা করবেন এখানে।

মহিপুর থানার ওসি সোহেল আহমেদ জানান, কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। খোলা স্থানে কোন অনুষ্ঠান হতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

(এমকেআর/এসপি/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯)