ঢাকা, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

স্বামী-শাশুড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা

২০২০ ফেব্রুয়ারি ১৯ ১৭:১২:৪৪
স্বামী-শাশুড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা

নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউপির চাপুলিয়া গ্রামে স্বামী-শাশুড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে একজন গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ স্বামী ও শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কোটাকোল ইউপির চাপুলিয়া গ্রামের আবু বক্কার মোল্যার ছেলে হাফিজুর মোল্যার সাথে দীর্ঘ ১২ বছর পূর্বে কালিয়া উপজেলার বিল বাউচ গ্রামের হাবি কাজীর মেয়ে বিউটির সাথে শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে একে একে দু’ছেলে ও এক কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করলেও তাদের সুখের ঘরে বাঁধ সাধে শাশুড়ি রাহিলা বেগমসহ শ্বশুর বাড়ির অন্য লোকজন। এরপর থেকেই স্বামী-শ্বাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিউটির ওপর শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে আসছিল।

গত শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিউটির ওপর স্বামী-শ্বাশুড়ি নির্যাতন করে এবং রাতে তাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনার পর ক্ষোভে-দুঃখে শনিবার সকাল ৬ টার দিকে নির্যাতিত ওই গৃহবধূ বিউটি বেগম (৩২) রান্না ঘরের সামনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে তার পুরো শরীর ঝলসে যায়। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে মারাত্বক দ্বগ্ধ অবস্থায় স্থানীয় বড়দিয়া হাজী রওশন ক্লিনিকে ভর্তি করে।

এখানে বিউটির অবস্থা মুমূর্ষ হয়ে পড়লে তাকে ওই দিনই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দীর্ঘ চার দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তিন সন্তানের জননী বিউটি বেগম। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে পুলিশ স্বামী হাফিজুর মোল্য (৪৮) ও শ্বাশুড়ি রাহিলা বেগম (৭০)কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।

অভিযুক্ত স্বামী হাফিজুর রহমান তার স্ত্রীর ওপর নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার সময় আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। প্রতিবেশিদের চিৎকারে বাইরে এসে দেখি বিউটির শরীরে লাগা আগুন পানি দিয়ে নেভানোর চেষ্টা চলছে।

বুধবার দুপুরে লোহাগড়া থানার ওসি (তদন্ত) আমান উল্লাহ আল বারি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয় নাই।

(আরএম/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০)