ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » মুক্তিযুদ্ধ » বিস্তারিত

১০ মে, ১৯৭১

তুমুল সংঘর্ষের পর কক্সবাজার পাকবাহিনীর দখলে চলে যায়

২০২১ মে ১০ ০০:১৭:২০
তুমুল সংঘর্ষের পর কক্সবাজার পাকবাহিনীর দখলে চলে যায়

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক :গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান সেনাপতি কর্নেল ওসমানী ভুরুঙ্গমারীতে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি পরিদর্শন করেন। ভুরুঙ্গমারী থানার জয়মনিরহাট ডাকবাংলোর সামনে কর্নেল ওসমানীকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এখানে এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে কর্নেল ওসমানী উপস্থিত সুধীদের উদ্দেশে বলেন, “আমি আজ গর্বিত যে, বাংলাদেশের মাটিতে থেকে আমার লোকের সামনে কথা বলতে পারছি।”

যশোরের চৌগাছা ও মাসালিয়া নামক স্থানে পাকবাহিনীর সাথে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে ৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। অপরদিকে দুজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

দুদিন ধরে তুমুল সংঘর্ষের পর কক্সবাজার পাকবাহিনীর দখলে চলে যায়।

চট্টগ্রামের হাতিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের ওপর পাকহানাদার বাহিনী ব্যাপক হামলা চালায়।

মুক্তিযোদ্ধারা চৌমুহনী-লক্ষীপুর সড়কে পাকিস্তান বাজারের পূর্ব দিকে এ্যামবুশ করে। পাকবাহিনীর গাড়ির বহর এ্যামবুশ এলাকার কাছাকাছি হলে মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। পরে পাকসেনারা প্রস্তুতি নিয়ে মর্টার ও আর্টিলারির সাহায্যে আক্রমণ চালালে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরে আসে। সংঘর্ষে কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়।

পাকবাহিনীর একজন মেজরসহ ৫০ জন সৈন্য রসদ বোঝাই একটি স্টিমার নারায়নগঞ্জ থেকে খুলনা অভিমুখে যাত্রা করে। তালাঘাটে ভেড়ার সাথে সাথে মুক্তিবাহিনী স্টিমারটি ঘেরাও করে ফেলে। পাকসেনারা সবাই মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করলে তাদেরকে নদীর তীরে নামিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা স্টিমারটি পানিতে ডুবিয়ে দেয়।

তেলিয়াপাড়ায় মুক্তিবাহিনীর মূল ঘাঁটির ওপর পাকবাহিনীর এক কোম্পানি সৈন্য হামলা চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের পাল্টা আক্রমণে পাকসেনারা প্রচুর ক্ষতি স্বীকার করে পিছু হঠে যায়।

পাক হানাদার বাহিনী তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে যথাক্রমে লক্ষণশ্রী গ্রামের কাছে নদীর পাড় দিয়ে পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে শহর অভিমুখে, সিলেট-সুনামগঞ্জ রাস্তা এবং হাছননগর রাস্তা দিয়ে সুনামগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। শহরে ঢুকেই বর্বররা হত্যা, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ রচনা করে।

এক প্রেস নোটের মাধ্যমে সামরিক সরকার বকেয়া খাজনা ও সুদ মওকুফের ঘোষণা দেয়। মূলত এটা ছিল পাক শাসকগোষ্ঠীর স্বাধীনতা-বিরোধী দালাল ও রাজাকারদের পক্ষে রাখার হীন প্রচেষ্টা মাত্র। এই ঘোষণাকে পুঁজি করে শান্তি কমিটির লোকজন নিরীহ জনসাধারণের কাছে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সহানুভূতির কথা প্রচার করতে থাকে।

দেশের কয়েকটি জেলা ও মহকুমায় শান্তি কমিটির শাখা গঠিত হয়। নবগঠিত কমিটির আহ্বায়করা হচ্ছেন, কুমিল্লা-সাবে এম.এন.এআজিজুর রহমান, যশোর- সৈয়দ শামসুর রহমান, রংপুর- সিরাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- সাবেক এম.এল.এ আলহাজ্ব এ.আবদুস সালাম, নাটোর- মওলভী গাউস উদ্দিন ও সাবেক এম.পি.এ আবদুস সাত্তার খান চৌধুরী, নওয়াবগঞ্জ(ঢাকা)-ডা.শফিউদ্দিন আহমদ, বরিশাল- অ্যাডভোকেট নূরুল হক মজুমদার, পটুয়াখালী- অ্রঅডভোকেট এ.কে. ফজলুল হক চৌধুরী, টাঙ্গাইল- অ্যাডভোকেট জুলমত আলী খান, ময়মনসিংহ-এ.কে.এম. মজিবুল হক ও পাবনা সাবেক এম.এন.এ বেনজীর আহমদ।

তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
(ওএস/এএস/পিএস/অ/মে ১০, ২০২১)