ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » ফিচার » বিস্তারিত

প্রবাসীর অর্থায়নে নির্মিত মসজিদ পাল্টে দিয়েছে গ্রামের চিত্র

২০২১ জুন ২৯ ১৪:৫৩:৪৫
প্রবাসীর অর্থায়নে নির্মিত মসজিদ পাল্টে দিয়েছে গ্রামের চিত্র

মতিউর রহমান মুন্না : দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন মোহাম্মদ জিলু মিয়া। তিনি প্রবাসে থাকলেও সব সময়ই দেশের অনগ্রসর মানুষের পাশে সামর্থ্য অনুযায়ী সম্পৃক্ত থেকেছেন। এই প্রবাসী নিজের এলাকার মানুষের পাশে থাকার স্বপ্ন ও প্রত্যশা লালন করেন সব সময়। এবার তিনি নিজ গ্রামে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি মসজিদ নির্মাণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

প্রবাসীর অর্থায়নে নির্মিত দৃষ্টিনন্দিত মসজিদ যেন পাল্টে দিয়েছে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও গুমগুমিয়া গ্রামের চিত্র। আধুনিক স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত মসজিদটি অন্যান্য এলাকার মানুষদেরও নজর কাড়ছে। মসজিদটির দিকে তাকালে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়।

দৃষ্টিনন্দন গম্বুজ বিশিষ্ট ব্যহৃত এই মসজিদটি বাড়িয়ে দিয়েছে পুরো এলাকার সুন্দর্য্য। নতুন মসজিদে আগ্রহ নিয়ে নামাজ আদায় করছেন গ্রামের মুসল্লিরা।

এক সময় এই অবহেলিত গ্রামে ছোট আকারের একটি মসজিদ ছিল। শুক্রবার অথবা ঈদের দিনে জামাতে সবাই এক সাথে নামাজ আদায়ের সময় জায়গার দেখা দিত সংকট। অনেক কষ্ট করে নামাজ আদায় করতে হতো গ্রামবাসীর। অবশেষে এই মসজিদ নির্মাণ হওয়ায় অনেক দিনের বেধে রাখা স্বপ্ন পূরন হলো গুমগুমিয়া গ্রামের মানুষের।

প্রায় ৩ একর জায়গার মধ্যে নির্মিত মসজিদটিতে ব্যবহার করা হয়েছে সম্পূর্ন আধুনিক জিনিসপত্র। তবে সব চাইতে বেশি আকৃষ্ট করেছে প্রাচীনতম আমলের বড় গম্বুজটি, যা দূর থেকে দেখলে যে কাউকে মুগ্ধ করে।

ওই গ্রামের সন্তান যুক্তরাজ্য প্রবাসী জিলু মিয়া বলেন, ছোট বেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল একটি মসজিদ নির্মাণ করবো। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতেই আমি আমার এলাকার লোকজনকে সাথে নিয়ে তাদের সহযোগীতায় মসজিদটি নির্মাণের উদ্যোগ নেই। এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হয়েছে, কাজ চলমান। দ্বিতীয় তলায় লাইটিংসহ কিছু কাজ বাকি রয়েছে। পাশাপাশি সামনের খালি জায়গায় ফুলের বাগানও গড়ে তোলা হবে। এছাড়া মসজিদটি নির্মাণে গ্রামবাসী ও যুক্তরাজ্যে থাকা গুমগুমিয়া গ্রামের লোকজনও সহযোগীতা করেছেন। তিনি বলেন, এলাকায় আরো অনেক কিছু করার পরিকল্পনা আছে।

স্থানীয় বাসিন্দা নাইম আহমেদ বলেন, মসজিদটি এলাকাকে যেন উজ্জল করেছে। মসজিদের নির্মাণশৈলী দেখে প্রতিদিনই এখানে ভিড় করেন লোকজন। কিছু দিন আগে একটি ইসলামিক সংগীত এর ভিডিও চিত্র ধারণ করা হয়েছে এই মসজিদে।

গ্রামের কয়েকজন প্রবীন মুরুব্বি বলেন, প্রথম দেখাতেই যে কারও দৃষ্টি কারে মসজিদটি। অন্য এলাকার লোকজন খুব প্রশংসা করেন। অনেকের কাছে এই মসজিদের নির্মাণশৈলী বেশ আকর্ষণীয়। এ উপজেলার মধ্যে এমন মসজিদ চোঁখে পরেনি। মসজিদটি পুরো গ্রামের সুন্দর্য্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এক সময় গ্রামে টিনের মসজিদ ছিল, সবাই এক সাথে নামাজ আদায় করা সম্ভব হতো না, জিলু মিয়া সবাইকে এক সাথে নামাজ আদায় করার সুযোগ করে দিয়েছেন এ স্মৃতি আজীবন থাকবে।

স্থানীয় লোকজন বলেন, এক সময় জিলু মিয়া না থাকলেও জিলু মিয়া কর্তৃক নির্মিত এই মসজিদটি থাকবে আজীবন। জিলু মিয়ার কথা সবাই মনে করবে।

(এম/এসপি/জুন ২৯, ২০২১)