ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » ফিচার » বিস্তারিত

ধ্বসে পড়ছে প্রাচীন স্থাপত্য রায়পুরের ‘চৌধুরী বাড়ি’

২০২১ জুলাই ১০ ১৬:৪৯:৪০
ধ্বসে পড়ছে প্রাচীন স্থাপত্য রায়পুরের ‘চৌধুরী বাড়ি’

প্রদীপ কুমার রায়, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) : ধীরে ধীরে ধ্বসে পড়ছে প্রাচীন স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন হিসেবে পরিচিত ‘চৌধুরী বাড়ি’। অযত্ন-অবহেলা, মালিকদের উদাসীনতা ও বয়সের ভারে ইতোমধ্যে ভেঙ্গে গেছে ভবনটির বৃহৎ একটি অংশ। অপর অংশটিও ভেঙ্গে পড়ার মতো অবস্থায় রয়েছে। প্রায় দেড়শ’ বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে জীর্ণ শীর্ণ অবস্থায়।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ঢাকা-রায়পুর মহাসড়কের পাশে রাখালিয়া এলাকায় চৌধুরী বাড়িটির অবস্থান। জেলা শহর থেকে এর দূরত্ব ১০ কিলোমিটার এবং উপজেলা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার। প্রায় ১০ শতাংশ জমির উপর নির্মিত ভবনটি। পুরো বাড়িটিতে রয়েছে ৩০ একর সম্পত্তি। বাড়ির মালিকগণ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপ এবং সরেজমিন গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

চৌধুরী পরিবারের বংশধর যুবলীগ নেতা আবু সাঈদ চৌধুরী শাকিল বলেন, আমরা যতোদূর জানি এটি প্রায় দেড়শ’ বছরের ঐতিহাসিক ভবন। মোঘল স্থাপত্যকলার একটি অনন্য নিদর্শন। এটি তৈরিতে কারিগর এনে এখানেই ইট পুড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। জানালার গ্রিল, নকশা ও দরজা-জানালার কাঠ এবং ছাদে লাগানো লোহার মোটা বারগুলো নৌ-যোগে আনা হয়েছে কলকাতা থেকে। অনেক ইতিহাসের স্বাক্ষী এই চৌধুরী ভবন। বংশানুক্রমিকভাবে আমরা এটাতে বসবাস করলেও বংশধরদের অন্যান্য লোকজন ভবনটি নিয়ে উদাসীন। কর্মের কারণে একেকজন একেক জায়গায় রয়েছেন। তাই কেউই দায়িত্ব নিয়ে ভবনটি মেরামত করেননি। ইতোমধ্যে ভবনের অর্ধেকের মতো অংশ ভেঙ্গে পড়েছে। অন্য অংশটিও যায় যায় অবস্থা। মেরামত করতে গেলেও এটির নকশা ঠিক রেখে সংস্কার করতে পারেন এমন কারিগরও এলাকায় নেই। তাই কাউকে দিয়ে যেনোতেনো ভাবেও মেরামত করা যাচ্ছে না। বরং অনভিজ্ঞ কেউ এটি ধরতে গেলে ধ্বসে পড়ার আশংকাও বিদ্যমান।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রায় ১০ শতাংশ জমির উপর নির্মিত ভবনটি জীর্ণ শীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। স্থানে স্থানে পলেস্তরা খসে পড়ছে। ভেঙ্গে গেছে দরজা-জানালা। নকশাগুলো পড়ে পড়ে অবস্থা। অনেক স্থানে ছাদের ঢালাই ভেঙ্গে গেছে। কোনোমতে আটকে রয়েছে লোহার বারের সঙ্গে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দোতালায় কেউ যায় না। নিচের কক্ষগুলো অব্যবহৃত থাকায় ঘুটঘুটে অন্ধকার। এখানে সেখানে পড়ে রয়েছে অব্যবহৃত জিনিসপত্র। ভবনটির একাংশের ছাদে নতুন করে ঢালাই দিয়ে বসবাসের চেষ্টা করা হচ্ছে। সেখান দিয়েও চুইয়ে পড়ছে। স্যাঁত স্যাঁতে হয়ে রয়েছে ভবনের দেওয়াল ও মেঝে। মূল ভবনে এখন আর কেউই বসবাস করছেন না। ভবন লাগোয়া পিছনে নতুন ভবন তৈরি করে সেখানে থাকছেন তারা। ভবনটির সামনে রয়েছে বড় একটি পুকুর ও সবজি বাগান। বিভিন্ন ধরনের ফল ও ফুলের গাছ পুরো বড়িটির সৌন্দর্য ধরে রেখেছে।

(পিআর/এসপি/জুলাই ১০, ২০২১)