ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

নৌকার বিরোধীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় মহিলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকের কম্বল বিতরণ

২০২২ জানুয়ারি ১৮ ১৮:০০:৫৪
নৌকার বিরোধীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় মহিলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকের কম্বল বিতরণ

কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিরোধিতাকারীদের নিয়ে কম্বল বিতরণ করছেন কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ বেগম কৃক। গত সোম ও মঙ্গলবার ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব কম্বল বিতরণ করেন তিনি। তাঁর এ কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও পরাজিত নৌকার প্রার্থীরা।

জানা যায়, গত ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের নৌকার মনোনীত প্রার্থী ছিলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি এসএম মহাব্বত হোসেন। ওই নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতা করে ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মো. কোবাদ হোসেন ও তাঁর ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম। গত সোমবার (১৭.০১.২২) বিকেলে রূপাপাত বোর্ড অফিসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কম্বল বিতরণ করেন কেন্দ্রীয় মহিলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক।

ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে তাঁর পাশে বসা ছিলেন নৌকার বিরোধিতাকারী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মো. কোবাদ হোসেন। একই দিন সকালে উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নে রতনদিয়া আলমের বাড়িতে আয়োজিত কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে মাহমুদা বেগম কৃকের সাথে উপস্থিত ছিলেন নৌকার বিরোধিতাকারী উপজেলা আ’লীগের সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের বহিষ্কৃত দপ্তর সম্পাদক মো. বোরহান আহমেদ, ১নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি মো. মতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক আলম মল্লিক, ২নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল হোসেন প্রমুখ।

এ ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও ঘোষপুর ইউনিয়নের নৌকার মনোনীত প্রার্থী এসএম ফারুক হোসেন বলেন, আমি এখনো ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আ’লীগের একজন সম্পাদক। আমাকে পাশ কাটিয়ে নৌকার বিরোধিতাকারীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় মহিলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক কম্বল বিতরণ করায় আমার মনে হয় পূর্ব থেকেই তাদের মধ্যে একটা যোগসূত্র ছিলো। ২৬ ডিসেম্বরের ইউপি নির্বাচনে সেই প্রভাব পড়েছে।
রূপাপাত ইউনিয়নের নৌকার মনোনীত প্রার্থী এসএম মহাব্বত হোসেন বলেন, স্বাধীনতার প্রতীক নৌকা মার্কাকে যারা পরাজিত করেছে তাদের সাথে নিয়ে মাহমুদা বেগম কৃক কম্বল বিতরণ করেছেন। আমি বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী হিসেবে সেখানে উপস্থিত থাকতে পারি না।

উপজেলা আ’লীগের সদস্য রূপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড় গ্রামের মো. মাহিদুল হক বলেন, যারা নৌকার বিরোধিতা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে দল থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিরোধিকারীরা এখনো বিভিন্ন দলীয় কর্মকান্ডে সক্রিয় রয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে এখনই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে দল ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় মহিলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃকের (০১৭১১-৬৪৯১৮৯) নম্বরে কল দেয়া হলে তিনি বলেন, আমি স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে গিয়েছি। যাদের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর বিরোধিতা করার কথা বলা হচ্ছে, তাদের কি দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে? বহিষ্কারের তালিকা পেলে আমার কোনো কর্মকান্ডে তাদের ডাকবোনা। আমি জানি ভালো কাজ করতে গেলে সমালোচনা হয়। তাই বলেতো আমি ভালো কাজ করা থেকে বিরত থাকতে পারিনা?

(কেএফ/এসপি/জানুয়ারি ১৮, ২০২২)