ঢাকা, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি » বিস্তারিত

মহাকাশে নক্ষত্রের ঝলকানি ধরা পড়লো নাসার ছবিতে

২০২২ জুলাই ১২ ১৮:৪৫:১৯
মহাকাশে নক্ষত্রের ঝলকানি ধরা পড়লো নাসার ছবিতে

বিজ্ঞান ডেস্ক : মহাকাশের এমন রঙিন ছবি আগে দেখেনি বিশ্ব। প্রথম দেখায় চোখ ধাঁধিয়ে যেতে পারে। তবে একটু ধাতস্থ হলেই এক অন্যরকম ইতিহাসের সাক্ষী হতে পারবেন। অসংখ্য তারার আলোর ঝলকানি দেখা যাচ্ছে এই ছবিতে। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার আলোচিত জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া প্রথম পূর্ণাঙ্গ রঙিন ছবি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউজে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে প্রথম তোলা ছবিগুলোর একটি প্রকাশ করেন। জেমস ওয়েব বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ। যেটি ২০২১ সালে সফলভাবে মহাকাশে প্রেরণ করে।

১০ বিলিয়ন ডলারের নাসার ফ্ল্যাগশিপ মিশনখ্যাত জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটি হাবল টেলিস্কোপের উত্তরসূরি। গত বছর ২৫ ডিসেম্বর এটি মহাকাশে পাঠানো হয়। প্রথম প্রকাশ পাওয়া জেমস ওয়েবের তোলা ঐতিহাসিক ছবিটির বিশেষত্ব হলো, এটি ৪৬০ কোটি বছর আগের সুদূর মহাবিশ্বের ছায়াপথগুচ্ছের ছবি। এটি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের প্রথম ‘ফুল-কালার ডিপ ফিল্ড ইমেজ’, এবং সেই সঙ্গে মানবজাতির ইতিহাসে দূর মহাবিশ্বের ‘ডিপেস্ট’ (গভীরতম) ও ‘শার্পেস্ট’ (সুস্পষ্ট) ইনফ্রারেড ছবি।

ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে গোল, চ্যাপ্টা, লম্বাটে নক্ষত্রপুঞ্জ। তার প্রতিটা বিন্দু স্পষ্ট ধরা পড়েছে ছবিতে। আবার এর পাশেই রয়েছে ঝকঝকে তারার আলো। ঠিকরে বেরোচ্ছে উৎসস্থল থেকে। খালি চোখেও বোধহয় এত নিখুঁত ছবি দেখা সম্ভব হতো না।

জেমস ওয়েবে তোলা ছবিটির ছায়াপথগুচ্ছ থেকে আলো এসে পৌঁছাতে ৪৬০ কোটি বছর লেগেছে। এত দূরের বস্তু ঝাপসা বা দেখার অযোগ্য থাকার কথা, কিন্তু এখানেই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের বিশেষত্ব। জেমস ওয়েবের ছবিতে দেখা যাওয়া ছায়াপথগুচ্ছের মোট ভর এত বেশি যে, সেটি মহাকর্ষিক লেন্স হিসেবে কাজ করছে। সেই লেন্স দিয়ে পেছনের আরও দূরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আলোকবিন্দু বড় হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। সেসব আলোকবিন্দুও একেকটি অদেখা ছায়াপথ, সেখানেও রয়েছে অগণিত গ্রহ-উপগ্রহ।

ওয়েব টেলিস্কোপের এই ছবি সোমবার (১১ জুলাই) হোয়াইট হাউসে প্রকাশ করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নাসা জানিয়েছে, ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তোলা প্রথম ছবি এটি। তবে মঙ্গলবারই সেই ছবির একটি সংগ্রহ প্রকাশ করার কথা নাসার। নাসা ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইসা) এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সির (সিএসএ) সঙ্গে যৌথ ভাবে ওই ছবিগুলো প্রকাশ করবে নাসা। তবে তার আগে প্রথম ছবিটির প্রকাশ করে নাসা জানিয়েছে, এই ছবি নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে তোলা মহাকাশের ‘গ্যালাক্সি ক্লাস্টার ০৭২৩’-র ছবি।

তবে ওয়েব টেলিস্কোপ মহাকাশের যে অংশটির ছবি তুলেছে সেটি মহাকাশের ক্ষুদ্রতম একটি অংশ মাত্র, এমনটাই বলছে নাসা। কতটা ছোট তা বোঝাতে নাসা বলেছে হাতের তালুতে ধরা একটা ছোট্ট বালির দানা বলা যেতে পারে ওই ছবিকে। তবে ওয়েবের সাহায্যে আগামী দিনে বহির্বিশ্বের আরও রহস্যভেদ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। সূত্র: নাসা।

(ওএস/এসপি/জুলাই ১২, ২০২২)