ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » শিল্প-সাহিত্য » বিস্তারিত

নিভৃতচারী মাছ ও উভচর অ্যামিবা

২০২২ অক্টোবর ০৮ ১৭:২৯:৫১
নিভৃতচারী মাছ ও উভচর অ্যামিবা







মামুন ওয়াদুদ

সমস্বরে ডেকে চলেছে রাতের ঝিঁঝিঁপোকা।
গতকাল স্ত্রী বিয়োগ হয়েছে কানাকুয়োর।
রাতের মতো গভীর শোক বুকে নিয়ে শুয়ে আছে সাত ভাইরা পাখি।
মাঠ জুড়ে ফুরফুরে বাতাসে উড়ছে কৃষকের স্বপ্ন।
আর টুনটুনির ব্যস্ততা জুড়ে আছে এক টুকরো আবাসন।

সকালের সোনারোদ উঠছেই।
গভীর ঢেউ এড়িয়ে সাঁতার কাটছে নিভৃতচারী মাছ।
রাতের তারারা ঝাড়বাতির মতো ঝুলে আছে সুখ দুঃখ হয়ে।
তারিখের পর তারিখের নিয়মে বয়ে চলেছে সালের ঋতুচক্র।
নিয়ম ভাঙতে হয় না কারো।
গাছ, পাখি, মাছ, রোদ কিংবা রাতের তারাদের কোন আফসোস নেই।
কোন পাখিকে খেতে হয় না এন্টিসেপ্টিক পিল।
কোন গরুর দরকার হয় না এসেনশিয়াল ড্রাগের পিংক কালারের কনডম।
কোন কাককে হতে হয় না ধর্ষনের আসামী।
বর্ণমালা পড়ে শিক্ষিত হওয়ার ভান করতে হয়না এদের।
আমৃত্যু ডু অর ডাই যুদ্ধে বেঁচে ফেরা চিত্রা হরিন কিংবা দলচর বনগরুর জন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠে নি।
গড়ে ওঠে নি এদের এতিম বাচ্চাদের জন্য কোন কওমি আবাসন।
লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের নামে এদের জন্য কখনো কেউ কোরবানির চামড়া তুলে নি।
সিংহ কিংবা হায়েনার হাত থেকে বেঁচে ফেরা হরিন শাবককে দেয়া হয়নি ছাদখোলা বাসে বিজয়ী সংবর্ধনা।
কিন্তু মানুষ।

অকৃতজ্ঞ, অপদার্থ, উভচর অ্যামিবা।
আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে বড় হয়।
নিজেই তৈরি করে শত সহস্র বাকোয়াজ নিয়ম।
এদের অশিক্ষিত গোত্র জমির আল কাটে।
যারা দেশ চালায় তারা সীমান্তে পুতে রাখে মাইন।
এন্টি সেপটিক পিল, পিংক কালারের কনডম এদের বংশবিস্তারে বাধা হয় না।
এদের সহস্র শাবক ধর্মে আক্রান্ত হয়।

কেউ খৎনা নেয়, পৈতা পরে, ক্রুশবিদ্ধ যিশুর অলংকার ধারন করে।
অসংখ্য স্থান, স্থাপনাকে ভিন্ন ভিন্ন নাম দিয়ে যুদ্ধ বাধায়।
সভ্যতার নিষ্ঠুরতম হন্তারক হয়ে সভ্যতা শেখানোর জন্য এরা বিশ্ববিদ্যালয় নামে রঙ্গমঞ্চ গড়ে তোলে।
এরা যুদ্ধ বাধায়।
এরা যুদ্ধ আহতদের খবর সংবাদপত্রে ছাপিয়ে নোবেল নেয়।এরা ইতিহাস লেখে।কেউ বীর সাজে।কেউ মহৎ হয়।
সবাই মনুষ্য শাবক।
সবাই মনুষ্য শাবক।
প্রকৃতির স্বার্থান্বেষী, ছিদ্রান্বেষী, গিরগিটি প্রবণ সত্ত্বা।