ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » পাশে দাঁড়াই » বিস্তারিত

সেই মায়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন মন্ত্রী আবুল হাসানাত 

২০২২ ডিসেম্বর ১৪ ২১:৩৬:৪৫
সেই মায়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন মন্ত্রী আবুল হাসানাত 

তপন বসু, আগৈলঝাড়া : “সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারছে না ক্যান্সার আক্রান্ত মা, মৃত্যুর প্রহর হেগানা মায়ের আকুতি” শিরোনামে ১৪ ডিসেম্বর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দেখে অসহায় মায়ের সুচিকিৎসার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জাতির পিতার ভাগ্নে, জনদরদী মহান নেতা, মন্ত্রী আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি।

আজ বুধবার তিনি ক্যান্সারে আক্রন্ত অসহায় মায়ের বিষয়ে জানতে পেরে চিকিৎসার জন্য ওই মাকে নিয়ে তার কাছে যেতে বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাসকে নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর নির্দেশে চেয়ারম্যান বিপুল দাস অসহায় মা বিউটি দাস তার তিন মাসের পুত্র সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে মন্ত্রীর সেরালস্থ বাস ভবনে মন্ত্রীর সাথে দেখা করেন।

এসময় মন্ত্রী অসহায় দম্পতিকে নিজে বসিয়ে খাবার খাইয়ে তাদের পরিবারের দুঃখ দুর্দশা ও চিকিৎসার কথা শোনেন। বিউটির স্বামী কাঠ মিস্ত্রী সুমন দাস মন্ত্রীকে অবহিত করেন যে, তার তার স্ত্রীর সু-চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকেরা ৩ লাখ টাকার প্রয়োজনের কথা তাদের জানিয়েছেন।

মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ অসহায় পরিবারের পাশে হাত বাড়িয়ে দিয়ে চিকিৎসার খরচ বাবদ দেড় লাখ টাকা প্রদানের আশ্বাস দেন। এছাড়াও সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সুশান্ত বালা ৫০ হাজার টাকা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত ৫০ হাজার টাকা এবং বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন। এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাখাওয়াত হোসেন সুমন দাস ও বিউটির পরিবারকে সহায়তার জন্য আর্থিক সহযোগীতা প্রদান করেছেন। বাকাল ইউপি চেয়ারম্যানকে ওই পরিবারের জন্য সব রকমের সহযোগীতা করার জন্যও মন্ত্রী নির্দেশ প্রদান করেছেন বলে জানিয়েছেন বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস। চিকিৎসকের কথানুযায়ি আগামী রবিবার (১৮ডিসেম্বর) বিউটি দাস চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গমন করবেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বাকাল ইউনিয়নের কোদালধোয়া গ্রামের হতদরিদ্র কাঠ মিস্ত্রী সুমন দাস স্ত্রী বিউটি দাস চতুর্থ সন্তান প্রসবে সিজারিয়ান অপরেশনের সময় এ্যাপেন্ডিস অপারেশন করানো হয়। ওই অপারশনের কয়েক মাস যেতে না যেতেই বিউটির কানের নীচে টিউমার দেখা দিলে বরিশালের চিকিৎসক অধ্যাপক এসএম সরোয়ারের তত্ত্বাবধানে ফেয়ার কিনিকে টিউমার অপারেশন করা হয় তার। অপরেশন করা টিউমারের নমুনায় মহাখালী ক্যান্সার ইনিস্টিটিউট থেকে বিউটির শরীরে ক্যান্সার এর জীবাণুুর রিপোর্ট আসে। শরীরে ক্যান্সারের জীবাণু ধরা পরায় দুগ্ধজাত পুত্র সন্তানকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে না বলে জানান চিকিৎসক। তবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন নিয়মিত থেরাপি দিলে বিউটির ক্যান্সার মুক্ত হবেন। এজন্য প্রয়োজন ছিল তিন লাখ টাকার। গোয়ালের গরু বিক্রি ও ধার দেনা কর চড়া সুদে টাকা এনে বিউটির চিকিৎসার পরে আর তাদের কোন সহয় সম্বল ছিল না।

তিন কন্যা সন্তারে লেখাপড়ার খরচ যুগিয়ে তিন মাসের পুত্র সন্তানের বিকল্প দুধ কেনার টাকাও ছিল না তাদের। টাকার অভাবে কোথাও চিকিৎস করাতে পারছিলনা না বিউটি। বিনা চিকিৎসায় শরীরে অমানুসিক যন্ত্রণা ভোগ করে বাড়িতেই মৃত্যুর প্রহর গুনতে থাকা বিউটির পাশে দাড়িয়ে আর্থিক সহায়তাসহ সকল প্রকার সহায়তার আশ্বাস দিয়ে আবারও মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন জাতির পিতার ভাগ্নে. মন্ত্রী মর্যাদায় পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরীবিক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক, বরিশাল জেলা আওয়াম লীগ সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ -এমপি।

বিউটির স্বামী ও বিউটি সহয়তার জন্য মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ১৪, ২০২২)