ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » মুক্তিযুদ্ধ » বিস্তারিত

‘আমি স্বাধীনতা ঘোষণার ওয়ারলেস বার্তার কপি দেখেছি’

২০২৩ জানুয়ারি ০৯ ১৫:২৯:০৮
‘আমি স্বাধীনতা ঘোষণার ওয়ারলেস বার্তার কপি দেখেছি’

দেবেশে চন্দ্র সান্যাল


১৯৭১ সালের মার্চ মাস ছিল উত্তাল। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নৃংশতম হত্যা কান্ড, জ্বালাও, পোড়াও ও অন্যান্য মানবতা বিরোধী কাজ করেছে। ২৬ মার্চ’৭১ সকাল ৭টার দিকে আমার গ্রামে আমি, মো: নজরুল ইসলাম, মো: আবুল কালাম সরকার ও অন্যান্য কয়েক জন ঘটনা জানার জন্য শাহজাদপুর থানার স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য (এম. পি.এ) এ্যাড. জনাব মো: আব্দুর রহমান স্যার এর বাড়িতে গেলাম। তাঁর বাড়িতে আওয়ামী লীগ নেতা/কর্মীতে ভরপুর। সকাল ৯টার দিকে শাহজাদপুর থানার ওসি জনাব আব্দুল হামিদ সাহেব স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তার কপি নিয়ে এম. পি. এ স্যারের বাসায় এলেন। তখন এম.পি.এ স্যারের বাসা ছিল আওয়ামী লীগ নেতা/কর্মী ও সচেতন জন সাধারনে ভরপুর। এম.পি.এ স্যারের পিতা উদ্বেগ উৎকন্ঠায় বাড়ির সামনে দিয়ে পায়চারী করছিলেন। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে বাসা থেকে এম.পি.এ স্যারের ভাই জনাব মো: আব্দুল গফুর সরবত স্বাধীনতা ঘোষনার ওয়ারলেস এর একটি কপি হাতে নিয়ে বাড়ির গেটে এসে হাত উঁচু করে ওয়ারলেসের কপিটি সবাইকে দেখালেন। তিনি ওয়ালেস টেলিগ্রামের কপিতে লেখা সকলের সম্মুখে পড়লেন। তিনি বললেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চ’৭১ মধ্য রাতের পর গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। তিনি শেষ বাণী প্রদান করেছেন এবং সাবাইকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে আহ্বান জানিয়েছেন। সেই টেলিগ্রাম বার্তাটিতে যা লেখা ছিল তা হলো-

Ò From Dacca

To pleople’s of Bangladesh and all of the world.

Pakistan arms forces suddenly attacked E.P.R of Peelkhana and police forces at Rajarbag from 00 hours of 26th March killing laks of unarmed people[.] Fierce battle going on with EPR and police forced in the street of Dacca and people are fighting gallantly for the freedom of Bangladesh. Every section of people of Bangladesh asked-attack enemy force at any cost of Bangladesh. May Allah bless you and help in your struggle of freedom.

Joy Bangla
Sk.Mujib.”

তার পর এম.পি.এ স্যার জাতির পিতার স্বাধীনতা ঘোষণার কথা শাহজাদপুরের সর্বত্র জানানোর জন্য শাহজাদপুর সদর ও অন্যান্য স্থানে প্রচারের জন্য কয়েক টি মাইক নামিয়ে দিলেন। পরে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য (এম.পি.এ) স্যার ঘর থেকে বের হয়ে এলেন। তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বললেন “ আপনারা সবাই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হন। জাতির পিতা যার কাছে যা আছে তা নিয়ে শত্রু মোকাবেলা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

লেখক : বীর মুক্তিযোদ্ধা।