ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

দিনাজপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি ভাংচুর ও উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন

২০২৩ জানুয়ারি ২৬ ১৯:৩১:৪৩
দিনাজপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি ভাংচুর ও উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ মোল্লার বাড়ি ভাংচুর ও উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে, মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল।

বৃহস্পতিবার ( ২৬ জানুয়ারি) বেলা ২ টায় আমবাড়ী বাজারে শুরু হওয়া এই মানববন্ধন চলে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত। ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসুচিতে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ অংশ নেয়।

দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার ১০ নং পুনট্টি ইউনিয়নের দৌলতপুর নিবাসী মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাজ মোল্লার পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। মানববন্ধনে অংশ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহিম খলিল বলেন, অবিলম্বে দোষিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হোক।

মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আমিনুল এবং তানভীরুল বলেন,এই স্বাধীন দেশে এমন বর্বরতা বড়ই বেদনা দায়ক। আমরা এর বিচার চাই।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ই জানুয়ারি ২০২৩ প্রভাবশালী কুচক্রী ভূমিদস্যু মোসাব্বের এর ভাতিজা বাবুল এর করা মামলায় দিনাজপুর চিরিরবন্দর সহকারি জজ মিলন চন্দ্র রায় এই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে ভিটে থেকে উচ্ছেদ আদেশ প্রদান করেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় মোবাররক, মুসলেম,আলিম জানায়, এই উচ্ছেদের ঘটনাটি আমাদের স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক যে মানুষটি নিজেকে উৎসর্গ করে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিল সেই মহান মানুষটির মৃত্যুর ঠিক ৬-৭ মাসের মাথায় তার নির্মানাধীন বসতবাড়ি দোকানপাট ভেঙে দিয়ে তার পরিবারকে পথে বসিয়ে দিল আমরা দুঃখের সাথে আরও বলছি যে জমি থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাজ মোল্লার বসতবাড়ি ও দোকানপাট ভেঙ্গে চুরে তার পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। মূলত সেই জমি দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর আগে মোঃ মন্ডলের একমাত্র ছেলে জাবেদুল ইসলাম ও তফিজন বিবির দুই ছেলে (১) কফিল উদ্দিন সাহা (২) মজিবর সাহা তাদের ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া ৭৬ নং খতিয়ানের ১৮৮০ দাগের জমি মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাজ মোল্লার ছোট ছেলে মোঃ ইমরান মোল্লার নিকট বিক্রয় করে।

উক্ত জমিতে ২০১০ সালে মোঃ ইমরান মোল্লা বসতবাড়ি নির্মাণ করে সপরিবারে বসবাস করতে শুরু করেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মোঃ ইমরান মোল্লা ও তার ভাই সংগ্রাম মোল্লার সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, আমি আইনের লোক আইনকে আমি অজস্র শ্রদ্ধা করি ও ভালোবাসি আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।
তবে দুঃখ শুধু এটাই বিচার বিভাগ ও আইন প্রয়োগ করি সংস্থা স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে যাচাই-বাছাই না করেই অন্যায় ভাবে আমার নির্মাণাধীন বসত বাড়ি ও দোকানপাট বুলডোজার দিয়ে ভেঙে চুরে দুমড়ে মুচড়ে ধুলিস্যাৎ করে উচ্ছেদ অভিযান চালায়।

উচ্ছেদ অভিযান চলাকালীন সময় বাড়িতে আমার বৃদ্ধ মা একমাত্র ভাগ্নী ও এক বছরের ছোট্ট নাতনী ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিল না আমার কথা হচ্ছে মহামান্য আদালত উচ্ছেদ অভিযানের রায় দিয়েছেন ঠিক আছে কুচক্রী ভূমিকে খেকো মসাব্বের এর ভাতিজা বাবুল যদি সম্পূর্ণ দালিলিকভাবে ওই জমির মালিক হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই মহামান্য আদালত তাকে জমি বুঝিয়ে দিবেন কিন্তু মহামান্য আদালত আমার জান ও মালের নিরাপত্তার জন্য ন্যূনতম একটা সময় তো আমাকে দিবেন।

কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য যে মহামান্য আদালতের নির্দেশ পালন করতে আসা নাজির তোফায়েল আহমেদ কর্তব্যরত এস আই আমাকে কোন প্রকার কোন সময় না দিয়ে বুলডোজার এনে এমনভাবে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন যেন এটাই সুযোগ যেহেতু বাড়িতে কোন পুরুষ লোক নেই এই মুহূর্তে উচ্ছেদ করতে না পারলে হয়তো আর কোনদিন তারা এই বাড়িটা উচ্ছেদ করতে পারবে না।

আমরা মনে করি সাংবাদিক হচ্ছে জাতির বিবেক তাই আপনাদের মাধ্যমে দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ সহ বাংলাদেশ বিচারবিভাগ ও আইন প্রয়োগ কারি সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানাচ্ছি যে কুচক্রী ভূমিকে মোসাব্বের এর ভাতিজা বাবুল মোল্লা বাদী হয়ে কোটে যে মামলাটি করেছেন তার বিবাদী হচ্ছে (১) মোঃ শহিদুল হক (২) মোঃ শফিকুল ইসলাম (৩)মোঃ মাজেদুর রহমান (৪) সোহাগ বাবু সর্ব পিতা আব্দুল মোতালেব মোল্লা মহামান্য আদালত উচ্ছেদ আদেশটি দিয়েছেন সেটি হচ্ছে এই ৪ জনের জমির উচ্ছেদ আদেশ।

মহামান্য আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ আদেশ পালন করতে আসা নাজির মোঃ তোফায়েল হোসেন ও কর্তব্যরত সাব ইন্সপেক্টর মোঃ আলমগীর হোসেন দুজনেই আইন বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান সম্পন্ন বলে আমি মনে করি তারা সম্পূর্ণ সত্য ঘটনাটা জানার পরেও কুচক্রী মোসাব্বের ও বাবুলের অবৈধ অর্থের কাছে নিজের সততাকে বিসর্জন দিয়ে বিবাদী চারজনের জমি উচ্ছেদ না করে বাদী বিবাদীর সমন্বয়ে আমার জমিতে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই আমার ঘরবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সব ধুলিস্যাৎ করে দেয়।

আমাদের কষ্ট হচ্ছে এই ভেবে যেখানে দেশনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সর্বোচ্চ সম্মানের স্থানে রেখেছেন সেখানে কতিপয় কিছু অসাধু প্রশাসনিক কর্মকর্তার ও স্বার্থন্বেষী মানুষের কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের উপর অত্যাচার বাড়ি থেকে উচ্ছেদসহ মুক্তিযোদ্ধাদের জমি দখল করে নিচ্ছে।

তাই আপনাদের মাধ্যমে আমরা দুই ভাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ বাংলাদেশ বিচার বিভাগ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি যে দয়া করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর এই সকল নির্যাতনকারীদের দখলদারদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি ব্যবস্থা করা হোক পাশাপাশি আমরা কুচক্রী মোসাব্বের এর ভাতিজা বাবুল এর মিথ্যা দলিল ও কোর্টের ডিক্রি জারির মাধ্যমে যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

(এসএএস/এএস/জানুয়ারি ২৬, ২০২৩)