ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » অর্থ ও বাণিজ্য » বিস্তারিত

‘বৈষম্য ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলকেও ছাড়িয়ে গেছে’

২০২৪ এপ্রিল ১৮ ১৭:৫৬:২১
‘বৈষম্য ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলকেও ছাড়িয়ে গেছে’

স্টাফ রিপোর্টার : স্বাধীনতার ৫২ বছরে বাংলাদেশের অনেক ইতিবাচক অর্জন রয়েছে। বিশৃঙ্খলা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বাধা-বিপত্তির পরও অনেকগুলো সূচকে দেখার মতো অগ্রগতি হয়েছে। একই সময়ে নেতিবাচক দিকগুলোর মধ্যে প্রধানতম হলো বৈষম্য। ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি যুগ মিলে যে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, বর্তমানে বৈষম্য তাকেও ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. জাহিদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সিপিডির ধানমন্ডি কার্যালয়ে প্রফেসর রওনক জাহান ও প্রফেসর রেহমান সোবাহান সম্পাদিত ‘ফিফটি ইয়ার্স অব বাংলাদেশ: ইকোনোমি, পলিটিকস, সোসাইটি অ্যান্ড কালচার’ শীর্ষক বই নিয়ে আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

জাহিদ হোসেন বলেন, দেশে উন্নয়ন হয়েছে, এর পেছনে কাজ করেছে জনশক্তি। মানুষ কৃষি, শিল্প, বাণিজ্যে উৎপাদনের মাধ্যমে উন্নয়ন করেছে, এগিয়ে নিয়েছে। আবার প্রবাসী আয়ের মাধ্যমে তারা সহায়ক হয়েছে। একক এবং সমন্বিত ব্যবস্থার মাধ্যমে এটা হয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতির একটি শ্রমনিবিড়ি সম্প্রসারণ ঘটেছে। কৃষি, শিল্প, বাণিজ্যে সংস্কারের মাধ্যমে এই উন্নয়নের ধারাকে সচল রাখতে সহায়তা করেছে।

প্রফেসর রওনক জাহান বলেন, বাংলাদেশে অর্থনীতি ও রাজনীতির ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু কোন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন হয়েছে, সে সম্পর্কে ভালো ধারণা নেই। উন্নয়ন ও পরিবর্তন ধীরে ধীরে হয়েছে। গত ৫২ বছরে আর্থসামাজিক বিভিন্ন সূচকে উন্নয়ন হয়েছে। সেসব বিষয়ে বইয়ের লেখকরা ডাটা অ্যানালাইসি করে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রথম প্রজন্মের চ্যালেঞ্জগুলো মোটামুটি মোকাবিলা করা গেছে। আগামীতে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা, দ্বিতীয় প্রজন্ম কতটুকু প্রস্তুত? আমাদের হাইটেক খাতে রপ্তানি হয় মাত্র এক শতাংশ। যেখানে ভিয়েতনামে ৪৫ শতাংশ। অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে, তবে শ্রম নির্ভর সক্ষমতা অর্জনে আমরা পিছিয়ে।

তিনি বলেন, নিম্ন আয় ও মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে ব্রাজিল ৩৫ বছর ধরে আটকে আছে। ফিলিপাইন ৩৩ বছর ধরে একই জায়গায় আটকে আছে। দেশের উন্নয়ন যে জায়গায় উপনীত এটাকে টেকসই ও ত্বরান্বিত করতে প্রযুক্তি, দক্ষতা ও মানবসম্পদের উন্নয়ন প্রয়োজন।

দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, দুটি গোষ্ঠী রাষ্ট্র ও সমাজে অত্যন্ত প্রভাবশালী। দেশ রাজনৈতিক পুঁজিবাদ প্রত্যক্ষ করছে। অনেকে গ্রহণ করেন সামাজিক ধর্মীয় কৌশল। শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মীয় প্রভাব বেড়েছে। বইটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকে বহু শাসকের সরকার হয়েছে। সবার অংশগ্রহণের সুযোগ থাকলেও রাজনৈতিক কারণে তারা বাদ পড়ে যায়। তার মানে গণতন্ত্রের মধ্যে স্বৈরতান্ত্রিক শাসক বা অনির্বাচিত শাসকদের শাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে প্রতিষ্ঠানগুলোর সেই ভাবে উন্নতি হয়নি। বৈদেশিক বাণিজ্যে আমরা তৈরি পোশাকের মধ্যে আটকে আছি। এরপর আমরা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাধ্যমে এগোব, নাকি অন্য কোনো পথে; এগুলো আমরা এখনো ঠিক করতে পারছি না। এক্ষেত্রে অভীষ্ট আরও স্পষ্ট করতে হবে।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ১৮, ২০২৪)