প্রচ্ছদ » স্বাস্থ্য » বিস্তারিত
তাপপ্রবাহে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে রোগী বাড়ছে
২০২৪ এপ্রিল ২৪ ১৭:০৮:৪৭তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : প্রচন্ড তাপ প্রবাহে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসাপাতালে রোগী বাড়ছে। প্রতিদিন আউটডোরে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২শ’ রোগী চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।
আজ বুধবার সকালে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’বেড জেনারেল হাসাপাতালে ২৯১ জন রোগী ভর্তি ছিলেন।এরমধ্যে ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডে রোগী সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন পর্যন্ত হিটস্ট্রোকে গোপালগঞ্জে কেউ মৃত্যু বরণ করেন নি। তবে তাপ প্রবাহকে সামনে রখে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসাপাতালে ১০ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ওইসব বেডে হিটস্ট্রোক সহ গরম জনিত রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হবে।
রোগীরা জানিয়েছেন, হাসাপাতাল থেকে স্যালাইন সহ অন্যান্য ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। কিছু ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।এখানে পানি সংকট রয়েছে বলে রোগীরা অভিযোগ করেন।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে আজ বুধবার সকালে ২৮ জন রোগী ভর্তি ছিল। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত আরো ১১ রোগী ভর্তি হয়েছে। মোট রোগী ভর্তি রয়েছে ৩৯ জন। শিশু ওয়ার্ডে সকালে ৩৭ রোগী ভর্তি ছিল। দুপুর পর্যন্ত আরো ১০ টি শিশু ভর্তি হয়েছে। এখানে মোট রোগী ৪৭। শিশু ওয়ার্ডে সব রোগী বেডে রয়েছে। কিন্তু ডায়রিয়া ওয়াডে অনেক রোগী ফ্লোরে অবস্থান নিয়েছে।
গোপালগঞ্জ আবহওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান বলেন, গত ২০ এপ্রিল গোপালগঞ্জের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৪০.৮০ ডিগ্রি সেলিসিয়াসে ওঠে। প্রতিদিন তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৪০ এর মধ্যে ওঠানা করছে। এছাড়া মাঝেমধ্যে আকাশ মোঘাচ্ছন্ন থাকায় গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকায় মানুষের শরীরে ঘাম হচ্ছে। এতে মানুষ দুর্বল হয়ে পড়েছেন। দুপুর ১২ টার পর থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।বিকাল ৩টা পর্যন্ত এ প্রবণতা অব্যাহত থাকছে। তাই তিনি দুপুর ১২ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত একান্ত কাজ না থাকলে বাইরে বের না হতে পরামর্শ দিয়েছেন।
ডায়রিয়া রোগীর বাবা মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার ১৮ মাস বয়সের মেয়ে শিশু হুমায়ারাকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মঙ্গলবার গভীর রাতে ভর্তি করেছি। এখানে চিকিৎসক ও নার্সরা ভাল টিকিৎসা দিচ্ছেন। হাসপাতাল থেকে স্যালাইন সহ অন্যান্য ওষুধ দিয়েছে। বাইরে থেকেও ২/১টা ওষুধ কিনে এনেছি। আমার মেয়ে বেড পায়নি। ফ্লোরেই তার সু চিকিৎসা চলছে।
শিশু ওয়ার্ডের রোগীর স্বজন জাহানারা বেগম বলেন, আমার ভতিজার ১ বছর বয়সের ছেলে সামলানকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। সে চিকিৎসা ও ওষুধ পাচ্ছে। কিন্তু পানি সরবরাহ নাই। তাই আমাদের কষ্ট হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, ঈদের পর গড়ে এ হাসপাতালে প্রতিদিন ২শ’ রোগী ভর্তি থাকত। আউটডোরে ৮শ’ থেকে ১ হাজার রোগী চিকিৎসা নিতেন। তাপ প্রবাহ শুরুর পর আউট ডোরে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২ শ’ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ইনডোরে প্রতিদিন প্রায় ৩শ’ রোগী ভর্তি থাকছেন। এছাড়া শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজে শুধু মেডিসিন ও শিশু ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসাপাতালে রোগীর চাপ তুলনামূলকভাবে কম।
তিনি বলেন, এখানে পর্যাপ্ত সরকারি ওষুধ সরবরাহ রয়েছে।কোন সংকট নেই। ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডে বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত হিটস্ট্রোকে গোপালগঞ্জে কেউ মৃত্যু বরণ করেননি। তবে তাপ প্রবাহকে সামনে রখে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসাপাতালে ১০ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, হাসাপাতালের পাম্পে সমস্য দেখা দেওয়ায় পানি সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে পাম্পের কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত এ সমস্যার সমধান করা হচ্ছে।
(টিবি/এসপি/এপ্রিল ২৪, ২০২৪)