প্রচ্ছদ » মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিন » বিস্তারিত
১৫ মে, ১৯৭১
টিক্কা খান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মূল করতে বেশি দিন লাগবে না
২০২৪ মে ১৫ ১২:২০:১৮![টিক্কা খান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মূল করতে বেশি দিন লাগবে না](http://www.u71news.com/article_images/2024/05/15/Mukti_juddho_protidin.jpg)
উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : সিলেটের নালুয়া চা-বাগানে সিলেট-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর একটি বড় সামরিক বহরকে এ্যামবুশ করে এবং ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। এতে পাকবাহিনীর একটি ট্রাক সম্পূর্ণ ধ্বংস হয় এবং ২৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। পাকবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান সহযোদ্ধাদের নিয়ে নিরাপদ এলাকায় চলে আসেন।
লে. মোরশেদের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর একদল যোদ্ধা সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে পাকসেনাদের এ্যামবুশ করে । এতে পাকবাহিনীর একটি জীপ ও একটি ট্রাক ধ্বংস হয়। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর গুলির মুখে লে. মোরশেদ দলের সবাইকে নিয়ে ‘ট্যাকটিক্যাল উইথ্রড’ করে নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসেন।
কিশোরগঞ্জ থেকে পাকবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন এক প্লাটুন সৈন্য নিয়ে নান্দাইল প্রবেশ করে। স্থানীয় রাজাকার ও শান্তি কমিটির পরামর্শ ক্রমে পাকবাহিনী নান্দাইল থানার ওসি আবদুল আওলাকে নান্দাইলের সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেয়। তাদের না পাওয়া গেলে সাতদিনের ভেতর কিশোরগঞ্জ সামরিক আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশও দেয়া হয়। এই সাতজন মুক্তিযোদ্ধা হচ্ছেন-শাহ নেওয়াজ ভূঁইয়া,শশীকান্ত রায়, সিরাজুল ইসলাম বাচ্চু, এবং মো.রইসউদ্দিন ভুঁইয়া।
ঠাকুরগাঁওয়ের সদর থানার ফারাবাড়িতে সন্তান মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় পিতা শেখ শহর আলী ও তার ভাই শেখ বহর আলীসহ ১৯ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে পাকবাহিনী তাদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। পাক বর্বরদের গুলিতে তারা সবাই নিহত হন। অপর এক ঘটনায় রামনাথ হাটে রফিকুল ইসলাম, রেজাউল,বেলাল ও দেলোয়ারসহ ১১ জন নিরীহ মানুষ পাক হানাদরদের গুলিতে নিহত হন।
মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য ‘রাজাকার বাহিনী’ গঠন করা হয়।
ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বাংলাদেশের শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬শ ৬৭ জন।
ঢাকায় পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল টিক্কা খান বলেন, প্রদেশের সকল যায়গা থেকে সশস্ত্র প্রতিরোধ নির্মূল করা হয়েছে। তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে সন্ত্রাস চলছে। দুষ্কৃতকারীদের (মুক্তিযোদ্ধা) নির্মূল করতে বেশি দিন লাগবে না।
সামরিক শাসন কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেন, তিনজন এমপিএ যথাক্রমে যশোরের মইনুদ্দিন মিয়াজী, খুলনার হাবিবুর রহমান খান ও মোহাম্মদ সাঈদ আওয়ামী লীগের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেছেন। পৃথক পৃথক বিবৃতিতে তারা পাকিস্তানের অখন্ডতা ও সংহতির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
কৃষক শ্রমিক পার্টির সভাপতি এএসএম সোরায়মান এক বেতার বক্তৃতায় বলেন, পাকিস্তান টিকে থাকতেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দুষ্কৃতকারীরা (মুক্তিযোদ্ধারা) সীমান্ত অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিনষ্ট করে প্রদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে বিধ্বস্ত করার চেষ্টা করছে।
বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার অ্যালেক ডগলাস হিউম কমন্স সভায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনায় বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা পাকিস্তান সরকারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি। আমরা পাকিস্তানের জনগণের বর্তমান সমস্যাসমূহের একটি রাজনৈতিক সমাধান চাই এবং বাইরে থেকে কেউ তা চাপিয়ে দিতে পারবে না।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
(ওএস/এএস/মে ১৫, ২০২৪)