প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত
ঘূর্ণিঝড় রেমাল
বাগেরহাটে বিধ্বস্ত ৪৫ হাজার ঘরবাড়ি, পানিবন্দি ৫০ হাজার পরিবার
২০২৪ মে ২৭ ২০:০২:২৬.jpg)
সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা সুন্দরবনসহ বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ঝড়ো হ্ওায়া সাথে সাথে দিনভর বৃষ্টিপাত অভ্যাহত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক হিসেবে জেলার ৪৫ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে হাজার-হাজার গাছপালা।
বিদ্যুতের খুটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে পুরো জেলা। জলোচ্ছ্বাসে দেড় কিলেপামিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ও বাঁধ উপচে জেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৫০ হাজারের অধিক পরিবার। জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে মোংলা, রামপাল, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাট সদর উপজেলায় সাড়ে ৩ হাজার চিংড়ি ঘের ও পুকুরে ৭৩ কোটি টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক হাজার ৫৮১ হেক্টর জমির ফসলছ। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহম্মদ খালিদ হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, রামপাল ও সদর উপজেলায় সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবহওয়া স্বাভাবিক হলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য জানা যাবে।
রবিবার বিকাল থেকে একটানা ২০ ঘন্টা ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডব ও জলোচ্ছাসে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বন বিভাগের বিভিন্ন বন অফিসসহ টহলবোট, টিনের চালা, জানালা-জনাজা, সোলার প্যানেল ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
রেমালের তান্ডব চলাকালে জলোচ্ছাসের কবলে পড়ে কটকা অভয়ারণ্যে অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কোচিখালি, বগিসহ বিভিন্ন বন অফিসসহ বিভিন্ন টহলফাড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সুন্দরনে অভ্যন্তরে মিঠাপানির পুকুরগুলোও জলোচ্ছাসে লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। একমাত্র মিঠাপানির উৎস সব পুকুর ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাসে লোনা পানিতে তলিয়ে যাওযায় বনকর্মীদের পাশাশাশি বাঘ. হরিনসহ বন্যপ্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে। সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীরা অধিক উচ্চতার জলোচ্ছাসে ভেসে গিয়ে মারা যাওয়ারও খবর মিলেছে। সোমবার সকালে সুন্দরবন সংলগ্ন রায়েন্দা বেড়িবাধ এলাকায় বলেশ^র নদ থেকে স্থানীয়রা ৩টি মৃত হরিণ ভেসে যেতে দেখেছেন। সুন্দরবনের দুবলার মাঝের কেল্লা সাইক্লোন সেল্টার এলাকায় সাগরে একটি মৃত হরিণ ভাসতে দেখা যায় বলে সোমবার বিকেলে মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জেলে আলাল মিয়া। প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকায় মৃত ওই ৪টি হরিণ উদ্ধার করতে পারেনি তারা। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহম্মদ নূরুল করিম জানান, আবহওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে সুন্দরবনের গাছপালাসহ কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত করে জানানো সম্ভব নয়।
(এসএসএ/এএস/মে ২৭, ২০২৪)