প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত
গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু
২০২৪ অক্টোবর ১৪ ১৯:৪৫:০০তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা শওকত আলী (দিদার) হত্যা মামলার আসামি মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলিমুজ্জামান চৌধুরী (৫০) মারা গেছেন। রবিবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় ঢাকা নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার তানিয়া জামান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় ঢাকা নেয়ার পথে তিনি মারা যান। ওই দিন সকালে কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ে আলিমুজ্জামান। কারা কর্তৃপক্ষ তাকে প্রথমে গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত আলিমুজ্জামানের শ্যালক (স্ত্রীর ভাই) নাদিম চৌধুরী বলেন, গতকাল সকালে কারা কর্তৃপক্ষ আলিমুজ্জামনের অসুস্থতার কথা পরিবারকে জানায়। এরপর তাকে ফরিদপুর থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে মারা যায়। পূর্বে তার শারীরিক কোনো সমস্যা ছিলো না। ওই দিনের ( ১৩ সেপ্টেম্বর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী গাড়ি বহরে হামলার দিন) হামলায় সে অসুস্থ হয়। এঘটনা দুই দিন পর আলিমুজ্জামান থানায় মামলা করতে গেলে তার মামলা গ্রহণ না করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও পুলিশ তাকে তার গ্রাম ঘোনাপাড়া থেকে গ্রেপ্তার দেখায়।
গোপালগঞ্জের জেলা কারাগারের জেলার তানিয়া জামান ও কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, ১৫ সেপ্টেম্বর আলিমুজ্জামান চৌধুরীকে কারাগারে আনা হয়। তার উচ্চ রক্তচাপ ছিলো। গতকাল কারাগারে মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরণ (স্টোক) করে। তাকে প্রথমে গোপালগঞ্জ শেখ সায়রা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রামে অনুষ্ঠিত এক পথসভা শেষে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারতের জন্য নিজ গ্রাম টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতীর উদ্দেশে রওনা হন। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে তার গাড়ি বহর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা ঘোনাপাড়া মোড়ে পৌঁছালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী–সমর্থকরা মাইকিং করে দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গাড়িবহরে হামলা করেন। এতে জিলানীসহ সংগঠনের অর্ধশত নেতা–কর্মী আহত হন। এসএম জিলানীর গাড়ি বহরে থাকা কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদারকে হত্যা করা হয়।মরদেহ ঘটনাস্থলের অদূরে পাথালিয়া বাংলালিংক টাওয়ারের রাস্তার খাদে ফেলে রাখা হয়। এ সময় ভাঙচুর করা হয় ১০টি গাড়ি।
এ ঘটনায় ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে নিহত শওকত আলী দিদারের স্ত্রী রাবেয়া রহমান (৩২) বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমসহ ১১৭ জনের নাম উল্লেখ এবং ১ হাজার ৫শ’ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। এ মামলায় আলিমুজ্জামান চৌধুরী ১০৪ নাম্বার আসামি ছিলেন।
(টিবি/এসপি/অক্টোবর ১৪, ২০২৪)