ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

বরিশালে সরকারি অফিসের অধিকাংশ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র অকেজো

২০২৪ অক্টোবর ২২ ১৮:১৩:১৪
বরিশালে সরকারি অফিসের অধিকাংশ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র অকেজো

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আগুন নেভাতে বরিশালের সরকারি দফতরগুলোতে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও বেশিরভাগেরই নেই মেয়াদ। কোনোটি অকেজো, আবার কোনো কোনো দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যবহার পদ্ধতি জানেন না। যে কারণে একেকটি অগ্নি দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসলেও নেয়া হচ্ছে না কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ। তবে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।

সূত্রমতে, গত ১৩ অক্টোবর বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ভবনের নিচতলার স্টোর রুমে আগুন লাগে। হাসপাতালের কর্মচারীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা চালালেও বেশিরভাগ অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র ছিলো বিকল। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট দেড় ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এর পূর্বে গত জুন মাসেও এই হাসপাতালেরই আরেকটি স্টোর রুমে আগুন লাগে। তখনও ক্ষয়ক্ষতি হয় সরকারি সম্পত্তির। এভাবে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটলেও টনক নড়ছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের কর্মচারীরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রেরই মেয়াদ উত্তীর্ণ ও বিকল। তবে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, দুই এক জায়গায় দুই একটি অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র বিকল থাকতে পারে। এছাড়া সবই সচল রয়েছে। বিকল যন্ত্র মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একই অবস্থা নগরীর অধিকাংশ সরকারি অফিসের। খোদ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের বেশ কয়েকটিরই মেয়াদ নেই। জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও আইনজীবী সমিতির ভবনগুলোরও একই দশা। এসব অফিস আদালতে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ সেবা নিতে আসেন। তাই কোনো অগ্নি দুর্ঘটনা হলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা করছেন আইনজীবীরা।

বরিশাল জেলা ও দায়রা জন আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু বলেন, প্রতিদিন হাজার মানুষের আনাগোনা হয় সরকারি বিভিন্ন অফিস ও আদালতে। তবে এসব জায়গায় অগ্নি ঝুঁকি রয়েছে। সবার সাথে আলোচনা করে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের ব্যবস্থা করা হবে।

সিনিয়র সাংবাদিক আকতার ফারুক শাহীন বলেন, নগরীতে এক সময় হাজার খানেক পুকুর থাকলেও দখলের কারণে এখন হাতেগোনা কিছু পুকুর রয়েছে। এমন অবস্থায় শহরে যানবাহন ও জনগণ বাড়লেও বাড়েনি রাস্তাঘাটের পরিধি। ফলে প্রায়ই আগুন নিভানোর কাজ করতে গিয়ে পানি সংকট ও রাস্তা প্রসস্ত না হওয়ায় হিমশিম খেতে হয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ ভবন ও অফিসের অগ্নিনির্বাপনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. মোস্তফা মহসিন বলেন, জনবল সংকট থাকলেও আমরা সব সময় কাজ করে যাচ্ছি। সামনে শীত আসলেই আগুন লাগার ঘটনা বেড়ে যায়। এমন অবস্থায় অনেকেই আগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের বিষয়ে উদাসীন। তবে সবার সহযোগিতা পেলে বরিশালকে আরও নিরাপদ করে গড়ে তোলা যাবে। তিনি আরও বলেন, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় বর্তমানে ৪২টি ফায়ার স্টেশন চালু আছে।

(টিবি/এসপি/অক্টোবর ২২, ২০২৪)