ঢাকা, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

গোপালগঞ্জে নৌকা বাইচে নদীর পাড়ে হাজারো মানুষের ঢল

২০২৪ নভেম্বর ০১ ২২:০৫:৫৩
গোপালগঞ্জে নৌকা বাইচে নদীর পাড়ে হাজারো মানুষের ঢল

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : নৌকা বাইচকে ঘিরে সকাল থেকে মানুষ জমায়েত হতে থাকেন নদী পাড়ে। সেখানে বসে কালী পূজার গ্রামীণ মেলা। দুপুরে নৌকা বাইচে অংশ নিতে চলে আসেন নৌকা সহ মাঝিমাল্লারা। আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে মানুষ।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকাল থেকে এসব দৃশ্যের অবতারণা ঘটে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের রাধাগঞ্জ গ্রামে। সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের কালী পূজা উপলক্ষে আয়োজন করা হয় আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ উৎসব । রাধাগঞ্জ রাজার বনিক সমিতি এ বাইচ উৎসবের আযোজন করে। দুপুর ২ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে তুমুল বাইচ। এতে গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের বর্ণিল ৫০টি নৌকা অংশ নেয়। বাহারি নৌকাগুলো দেখতেও ছিল দৃষ্টিনন্দন । দারুণ প্রাণোচ্ছল তার মাঝি-মাল্লার দল। নদীর বুকে তাঁদের ছুটে চলা ও বইঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে নদীর দুই পাড়ে থাকা হাজারো দর্শনার্থী। নদীমাতৃক বাংলাদেশে নৌকাবাইচ লোকায়ত বাংলার লোকসংস্কৃতির যে অংশ, তা ভুলে যায়নি বাঙালি। তাই তো হেমন্তের মনোরম বিকেলে নদীপাড়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষের ঢল নামে। ঘাঘর নদীর খেজুরবাড়ি থেকে মান্দ্রা পর্যন্ত ২ কিলো মিটার জুড়ে নৌকা বাইচ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে নদীর দু’পাড়ে বসে মেলা। মেলার স্টলগুলোতে প্রচুর কেনা বেচা হয়েছে।

নৌকা বাইচ দেখতে আসা মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার লখন্ডা গ্রামের নিটুল রায় বলেন, এখানে নৌকা বাইচ দেখতে এসেছি । অনেক দিন পর উৎসবমুখর পরিবেশে এ কালারফুল ও প্রাণবন্ত নৌকা বাইচ উপভোগ করলাম ।

কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের মনু দাড়িয়া বলেন, আমি একটি ট্রলার (ইঞ্জিনচালিত নৌকা) নিয়ে আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজননিয়ে এই নৌকাবাইচ দেখতে এসেছি । আমাদের সাথে কয়েকটি শিশু আছে। যারা জীবনে এই প্রথম নৌকাবাইচ দেখলো। এই বাইচ দেখে তারা খুব আনন্দ পেয়েছে।

গণমাধ্যম কর্মী মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন, কোটালীপাড়্ উপজেলায় এক সময় অর্ধশত স্থানে দূর্গা, লক্ষ্মী, কালী ও বিশ্বকর্মা পূজায় নৌকা বাইচ হতো। কালের বিবর্তনে খাল,নদী দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় ঐহিত্যবাহী এ নৌকাবাইচ হারিয়ে যেতে বসেছে । বিনোদনমুখী এই নৌকা বাইচকে ধরে রাখার জন্য আমি উপজেলার নদী ও খাল দখলমুক্ত এবং খননের দাবি জানাচ্ছি ।

নৌকা বাইচ শেষে সন্ধ্যায় রাধাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির পক্ষ থেকে অংশ গ্রহনকারী বাছারী নৌকাগুলোর মালিকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এ সময় রাধাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

(এমএস/এএস/নভেম্বর ১, ২০২৪)