ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

বদলে যাচ্ছে বিয়ের পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের পদ্ধতি  

২০২৪ নভেম্বর ১১ ১৮:১০:১০
বদলে যাচ্ছে বিয়ের পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের পদ্ধতি  

নীলকন্ঠ আইচ মজুমদার, ঈশ্বরগঞ্জ : মানব জীবনের ঘটনাপ্রবাহের অন্যতম বিষয় হচ্ছে বিয়ে। এই বিয়ে কে নিয়ে ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে থাকে নানা আয়োজন। উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করে পরিবারের সদস্যদের মাঝেও। এমনকি সমাজের মানুষেরও থাকে নানাভাবে অংশগ্রহণ। যদিও ইদানিংকালে সামাজিক অংশগ্রহণের বিষয়টিতে ভাটা পড়েছে। পারিবারিক সদস্যদের অংশগ্রহণের মাঝেও চলছে ব্যস্তর অযুহাত। বিয়ের কার্যক্রম মূলত শুরু হয়ে থাকে পাত্রপাত্রী দেখার মাধ্যমে। পাত্রপাত্রী দেখার পূর্বে ঘটক কিংবা আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে চলে পাত্র পাত্রীর সন্ধান। ঘটকের কাজটিও ইতোমধ্যে কমতে শুরু করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে। মানুষের অর্থনৈতিক অগ্রসরতা, পরিবারিক ও সামাজিক বন্ধনের ঘাটতি এবং মানুষের ব্যস্ততার কারনে এসব ব্যবস্থায় চলে এসেছে আমূল পরিবর্তন।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে এখনও পাত্রপাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সামাজিক ভাবে দেখে নেয়াটাই সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছে বলে অভিভাবকদের ধারণা। ছেলে মেয়েদের প্রণয় ঘটিত কারনে এ পদ্ধতি ধীরে ধীরে কমে আসছে। পাত্রপাত্রীর নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ের ক্ষেত্রে দেখাশুনার পদ্ধতি খুব একটা লক্ষ্য করা যায় না। পারিবারিকভাবে দেখাশুনার মাধ্যমে যে বিয়ে হচ্ছে সেসব বিয়েতে এসব বিষয় এখনও এসব পদ্ধতি দেখা যায়। বিশেষ করে পাত্রীকে যখন দেখতে যাওয়া হয় তখন গোল আকৃতির সাজানো আসনের মধ্য জায়গায় অবস্থান নেয় পাত্রী। মুরুব্বি শ্রেণির মানুষ বসেন সামনে সারিতে। বেশির ভাগ সময়ই সাথে অবস্থান করেন ভাবী বান্ধবী সম্পর্কীয় অন্য নারীরা। চলে নানা ধরনের প্রশ্ন। নিজের নামের সাথে বাবা মায়ের নাম, লেখাপড়া সম্পর্কিত বিষয়, ধর্মীয় জ্ঞান যাচাই করেন পাত্র পক্ষের লোকজন। বিভিন্ন প্রশ্নের পর শুরু হয় চুল দেখা কথা বলা কিংবা হেঁটে দেখানো। যদিও ইন্টারভিউতে অনেককেই বিপদে পড়তে দেখা যায়।

সিঁথি শর্মিলা (ছদ্দ নাম) পাত্রী জানান, বিষয়টি ফেস করা অনেক কঠিন। অনেক জানা কথাও বলা যায় না। তবে এক্ষেত্রে এক আলাদা রকমের অনুভূতি কাজ করে।

পাত্র রাহমান সাব্বির রহমান জানান, পাত্রী দেখার অনুভূতি ভিন্ন রকমের। তবে পাত্রী দেখার সময় যে পরিমাণে প্রশ্ন করা হয় পাত্র দেখার সময় সে পরিমাণে প্রশ্ন করতে দেখা যায় এমনকি সবার সামনে চেয়ারেও বসতে হয় না। তবে পারিবারিকভাবে পাত্রপাত্রী নির্বাচন করা হলে বিবাহবন্ধন সুন্দর হয়। নিজেদের পছন্দের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় আবেগ বেশি কাজ করার ফলে বিবাহের পরবর্তী অনেক সময় ঝামেলায় পড়তে হয়।

সু-শাসনের জন্য নাগরিক সুজনের ঈশ^রগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি সাইফুল ইসলাম তালুকদার বলেন, বিবাহের ক্ষেত্রে পাত্রপাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে। তবে আমাদের সংস্কৃতির পূর্বের ধারণাটা অনেক ভালো ছিল। এতে করে পারিবারিক বন্ধন আরো সুদৃঢ় হতো।

(এন/এসপি/নভেম্বর ১১, ২০২৪)