ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

প্রচ্ছদ » কৃষি » বিস্তারিত

রাজবাড়ীতে লোকসানে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষিরা

২০২৪ ডিসেম্বর ২৭ ১৮:০৯:০৮
রাজবাড়ীতে লোকসানে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষিরা

একে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীতে উঠতে শুরু করেছে আগামজাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ। এবার অতিবৃষ্টিতে রোপণের পরই পেঁয়াজ খেতই পচে নষ্ট হওয়ায় ফলন কম হয়েছে।

তার ওপর বিদেশি পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় দেশি পেঁয়াজের দাম কম হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা।

বর্তমানে প্রতিমণ মুড়িকাটা পেঁয়াজ পাইকারী বাজারে বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার থেকে ১৭০০ টাকায় এবং বিঘায় এবার ফলন হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ মণ।

চাষিদের দাবি, সার-বীজসহ সব কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের খরচ বাড়লেও উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। বৈরী আবহাওয়ায় এবার যেমন ফলন কম হয়েছে, তেমনি বাজারে দামও খুবই কম। এরপর আবার পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। যে কারণে প্রতি বিঘায় প্রায় ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। তাই কৃষকদের বাঁচাতে ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি না করলে দেশি পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়বে।

কৃষক কবির মোল্লা বলেন, অবস্থা এবার ভালো না। বিঘায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে উঠতেছে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার। সার-ওষুধের দামের কারণে আমরা দিশেহারা। তাছাড়া এবার মুড়িকাটা পেঁয়াজ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। ন্যূনতম ৮০ থেকে ১০০ টাকা দাম হলে কৃষক কিছুটা বাঁচতো।

কৃষক শহিদুল বলেন, এ বছর প্রতিটি খেতেই ফলন খুব কম হয়েছে। পেঁয়াজ রোপণের পর বৃষ্টি হওয়ায় পেঁয়াজের গুটির ক্ষতি হয়েছে। গত বছর বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ মণ ফলন পেলেও এবার ৩০ থেকে ৩৫ মণ হয়েছে। এবার আট থেকে ১২ হাজার টাকায় পেঁয়াজের গুটি (বীজ) ও সারসহ সব কৃষি উপকরণের দাম বেশি হওয়ায় বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ ১০ হাজার টাকা। সে অনুযায়ী ফলনও ভালো হয়নি আবার দামও কম। যার কারণে বিঘায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার লোকসান যাচ্ছে।

কৃষক হারুন অর রশিদ বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে এবার আশানুরূপ ফলন হয়নি। ফলে খরচের অর্ধেক টাকা লোকসান হচ্ছে।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সঞ্জয় কুমার সাহা, মো. চাঁদ মিয়া ও লোকমান বলেন, নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ প্রথম দিকে কালুখালীর সোনাপুর বাজারে দুই হাজার পাঁচশ টাকা মণ বিক্রি হলেও এখন ১৭০০ থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কমের কারণ মূলত কৃষকের ঘরে এখনও পুরাতন হালি পেঁয়াজ আছে। এছাড়া পেঁয়াজ আমদানিও হচ্ছে। তবে দিন যত যাবে ততই দাম কমা ছাড়া আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। রবি মৌসুমের শেষের দিকে বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকের আগামজাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ পচে যায়। যার কারণে ফলন কিছুটা কম হয়েছে। ওই পেঁয়াজ এখন কৃষক বিক্রি করছেন। যেখানে বিঘায় ৫০ থেকে ৬০ মণ ফলন হওয়ার কথা, সেখানে হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ মণ। তবে দেশের পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারলে কৃষক লাভবান হবে।

(একে/এএস/ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪)