ঢাকা, বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

প্রচ্ছদ » প্রবাসের চিঠি » বিস্তারিত

ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘আমরা নারী’ সভাপতিকে হয়রানির প্রতিবাদে আইনি নোটিশ 

২০২৫ মার্চ ০৯ ১৭:২৪:২২
ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘আমরা নারী’ সভাপতিকে হয়রানির প্রতিবাদে আইনি নোটিশ 

ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টানায় প্রতিবাদকারী 'আমরা নারী'-এর নেত্রীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে আয়োজক সংগঠক ডিসি একুশে এলায়েন্সের সমন্বয়কারী ও ধ্রুপদ ইঙ্ক'র সভাপতি। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাঠানো নোটিশে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। উক্ত নোটিশের জবাবে সাংগঠনিক বিধিমালা লঙ্ঘনসহ তাকে হয়রানির দায়ে পাল্টা আইনি নোটিশ দিয়েছেন 'আমরা নারী'-এর সভাপতি মোহসিনা রিমি।

জানা যায়, গত ২২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যের আর্লিংটন শহরের কেনমোর মিডল স্কুলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসের উপ-রাষ্ট্রদূত ডিএম সালাউদ্দীন মাহমুদ তার বক্তব্য দেবার সময় তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে আবার ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। তিনি চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিষয়টিকে বেশি ফোকাস করতে গেলে উপস্থিত আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি তাদের তোপের মুখে পড়েন ফলে অনুষ্ঠানের বিঘ্ন ঘটে। বিশেষ করে মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহসিনা জান্নাত রিমির প্রতিবাদের মুখে তিনি মঞ্চ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। এ ঘটনার ৪ দিন পর আয়োজক সংগঠক ডিসি একুশে এলায়েন্সের সমন্বয়কারী ও ধ্রুপদ সভাপতি হিরন চৌধুরী রিমিকে ডিসি একুশে এলায়েন্সের সুনাম ক্ষুণ্ণ এবং দূতাবাস কর্মকর্তার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। উক্ত নোটিশে ২৪ ঘন্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। নোটিশের জবাবে 'আমরা নারী'-এর সভাপতি ও মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহসিনা জান্নাত রিমি সাংগঠনিক বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে পাল্টা একটি আইনি নোটিশ জারি করেন।

আইনি নোটিশের জবাবে আইনজীবী বেনজামিন আর ইনম্যান বলেন, ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে আপনার (ডিসি একুশে এলায়েন্সের সমন্বয়কারী ও ধ্রুপদ ইঙ্ক'র সভাপতি হিরন চৌধুরী) দ্বারা জারি করা কথিত 'কারণ দর্শানো নোটিশ' সম্পর্কে লিখছি, যা আপনি সুন্দরবনের সভাপতি নুরুল আমিন এবং আমার মক্কেল আমরা নারী-এর সভাপতি মোহসিনা রিমিকে পাঠিয়েছেন। চিঠিটি ডিসি একুশে অ্যালায়েন্স (ডিসিইএ)-এর অফিসিয়াল লেটারহেডে এসেছে বলে মনে হচ্ছে। আমার মক্কেল আপনার এই কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ, কারণ এটি আপনার সাবেক সমন্বয়কারী হিসেবে ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছে এবং ডিসিইএ পরিচালন নির্দেশিকার (Operating Guidelines) নির্ধারিত প্রক্রিয়াগত শর্তাবলী লঙ্ঘন করেছে।

আইনি নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, ডিসিইএ একটি অনিবন্ধিত প্ল্যাটফর্ম। ২০২৪ সালে ডিসিইএ-এর কাঠামো অনুযায়ী হিরন চৌধুরী আর সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন না। রিমির আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, হিরন চৌধুরী নিজে সমন্বয়কারী হিসেবে পদে থাকার জন্য অনৈতিকভাবে নিজেকে ধরে রেখেছেন এবং বেশ কয়েকটি নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন।

এ ছাড়া ২৭ ফেব্রুয়ারি পাঠানো ‘কারণ দর্শানো নোটিশে’ কোনো স্পষ্ট বিধির উল্লেখ না করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়াও আইনি দৃষ্টিতে প্রশ্নবিদ্ধ বলে দাবি করা হয়েছে। রিমির আইনি দল আরও বলেন, ‘ডিসিইএ-এর সদস্যরা ২০২৪ সালের রাজনৈতিক বিষয় এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, কিন্তু আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক বিষয় উত্থাপন করা হয়, যা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিবাদের সৃষ্টি করে।’

রিমি ও তার আইনি দল দাবি করেছেন, এই অনিয়মগুলোয় সংশ্লিষ্টদের পদত্যাগ করা উচিত। নতুন নির্বাচন হওয়া উচিত। যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি ভবিষ্যতে আর না ঘটে।

(আইএ/এসপি/মার্চ ০৯, ২০২৫)