প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত
কাশ্মীরে ইসলামি সন্ত্রাসবাদ
শুভবুদ্ধি সম্পন্ন বিশ্ববাসী ভারতের কাছে যোগ্য জবাব চায়
২০২৫ এপ্রিল ২৩ ১৭:৩৫:৫৪
শিতাংশু গুহ
ওরা শুধু ‘ধর্ম’ জিজ্ঞাসা করেছিলো। এরপর প্যান্ট খুলে ধর্ম পরীক্ষা করেছিলো। দেখা গেলো ওঁরা মুসলমান নয়, অতঃপর মাথায় গুলি করা হত্যা। একজন নয়, প্রায় ৩০ জন, একজন ইহুদীও নাকি আছেন নিহতদের মধ্যে। যারা এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটালো, তাঁরা ইসলামি সন্ত্রাসবাদী। একদল লোক গলা বাড়িয়ে বলবে, সন্ত্রাসের কোন ধর্ম হয়না, এঁরা আসলে মনের গহীনে ইসলামী সন্ত্রাসবাদের সমর্থক। সত্য হচ্ছে, সন্ত্রাসীদের শুধু ধর্মই আছে, অন্য কিছুই নেই?
সকালে সংবাদটি দেখার পর মনটা বিষাদে পরিপূর্ণ হয়ে যায়, একটি টুইট করি, তাতে লিখি: ‘নিউইয়র্ক টাইমসকে ধন্যবাদ। কাশ্মীরে যা ঘটেছে তাহাই ইসলামী মৌলবাদের প্রকৃত চেহারা। আরো লিখি, আমেরিকা যেমন আফগানিস্তান বা ইরাককে শায়েস্তা করেছে ভারতের উচিত এই শয়তানদের তেমনি শিক্ষা দেয়া। সজোরে আঘাত হানতে হবে’। কপি দেই ট্রাম্প, মোদী, তুলসী, নিউইয়র্ক টাইম্স, পিটিআই, রাজনাথ ও দৈনিক যুগশঙ্খ পত্রিকাকে। ফেইসবুকে শেয়ার করি।
কাশ্মীরে যখন এ নির্মম ঘটনা ঘটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তখন সৌদি আরবে, তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করে ফিরে আসছেন। আসার আগে তিনি নিশ্চয় সৌদি বাদশার সাথে কথা বলে এসেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ফোনে মোদীর সাথে কথা বলেছেন। ইসরাইল তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এ ঘটনা যখন ঘটলো তখন ক্যাথলিকদের ধর্মগুরু পোপ সদ্য প্রয়াত, তাঁরা শোকাহত। মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স সপরিবারে ভারতে অবস্থান করছেন।
পাকিস্তানের লস্কর-ই-তৈবা’র একটি সাবগ্রূপ এ ঘটনার দায়িত্ব স্বীকার করেছে। আইসিস, আলকায়দা, বোকাহারাম বা লস্কর-ই-তৈবা অথবা বাংলাদেশে আনসারুল্লাহ বাংলাটিম, আল্লার দল, হেফাজত বা এমনি অসংখ্য ইসলামী জঙ্গী গোষ্ঠীর চরিত্র ও আদর্শ একই, এঁরা সবাই ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায়? এরা শুধু মানুষ মারে তা নয়, মেরে আবার গর্বের সাথে দায়িত্ব স্বীকার করে। ধর্মের নামে এমন প্রহসন শুধু এরাই করতে পারে! এবং এদেরই মানায়।
“একাত্তরেও ওরা প্যান্ট খুলে ধর্ম পরীক্ষা করেছিলো ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, এবার কি হবে?”
কাশ্মীর হোক, বাংলাদেশ বা পাকিস্তান অথবা সিরিয়া, এমনকি ফিলিস্তিনে সর্বত্র একই চেহারা, একই সন্ত্রাস, কম আর বেশি। কখনো স্বাধীনতার নামে, কখনো মুক্তির সংগ্রামের নামে, কখনো ইসলাম রক্ষার জন্যে সন্ত্রাস এদের জন্যে অপরিহার্য। গাজার জন্যে এদের এত সংগ্রাম দেখলেন, কখনো দেখেছেন এঁরা ৭ই অক্টবর ২০২৩ হামাস সন্ত্রাসীরা যে কয়েকশ’ ইহুদীকে অপহরণ করে নিয়ে গেলো, আজো অনেকেই বন্দী-এদের নিন্দা করতে? দেখেননি-কারণ এদের মানবতাও ধর্মভিত্তিক। বাংলাদেশেও ধর্মভিত্তিক মানবতার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত দেখাচ্ছেন ধর্ম উপদেষ্টা এ কথা বলে যে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হয়না?
ভারত এখন কি করবে? ড: ইউনূস সরকারের তত্বাবধানে ভারত যেমনি ইসলামী মৌলবাদী গোষ্ঠীকে বাড়তে দিচ্ছে, তেমনি কাশ্মীরেও কি চুপ থাকবে? সেটি অবশ্য ভারতের সিদ্ধান্ত। তবে বিশ্বব্যাপী শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ চাইবে ভারত কঠোর ব্যবস্থা নিক। শান্তি’র জন্যে কখনো-সখনো যুদ্ধের প্রয়োজন হয়, ভারত কি যুদ্ধ করতে ভয় পায়? ইসলামী সন্ত্রাসবাদ পুরো বিশ্বের জন্যে হুমকিস্বরূপ, ভারত এদের নির্মূল করে বিশ্বে পুন্: শান্তি প্রতিস্থাপন করতে পারে।
বলা হচ্ছে, তথাকথিত আজাদ কাশ্মীর থেকে লস্কর-ই-তৈবা এসে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। যদি তাই হয়, তবে কি আজাদ কাশ্মীর হবে ভারতীয় উপমহাদেশের গাজা? প্যান্ট খুলে ধর্ম পরীক্ষার বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানীরা করেছিলো, এবং হিন্দুদের টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছিলো। ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গিয়েছিলো, কাশ্মীরে ২০২৫-এ আবারো তাই ঘটলো, এবার কি আজাদ কাশ্মীরের পতন ঘটবে? উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারতকে দায়িত্ব নিতে হবে। মানুষ ইসলামী জঙ্গীমুক্ত উপমহাদেশ চায়। বিশেষত: বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে ইসলামী জঙ্গীবাদের আঁতুরঘর ভারতকেই ভাঙতে হবে, এবং শুভস্য শীঘ্রম।
লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।