ঢাকা, শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

প্রচ্ছদ » অর্থ ও বাণিজ্য » বিস্তারিত

‘সিগারেটে যথাযথ কর না বাড়ায় জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়েছে’

২০২৫ মে ১০ ১২:১৮:১৪
‘সিগারেটে যথাযথ কর না বাড়ায় জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়েছে’

স্টাফ রিপোর্টার : সিগারেটের দাম না বাড়া এবং যথাযথ করারোপ না করায় জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক কৃষি-অর্থনীতিবিদ ড. এম. এ. সাত্তার মণ্ডল।

তিনি বলেন, সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই সিগারেটে কার্যকর কর আরোপের আপসের কোনো সুযোগ নেই। বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনে উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে সিগারেটে কার্যকর করারোপের প্রস্তাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

ইমেরিটাস অধ্যাপক কৃষি-অর্থনীতিবিদ ড. এম. এ. সাত্তার মণ্ডল বলেন, সাম্প্রতিক অর্থবছরগুলোতে বাংলাদেশে একদিকে- সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানো হয়নি, অন্যদিকে- এই ক্ষতিকারক পণ্যের ওপর যথাযথ করারোপও সম্ভব হয়নি। ফলে সিগারেটের সহজলভ্যতার কারণে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি যেমন বেড়েছে, তেমনি সরকার রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাপকভিত্তিক সংস্কারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সিগারেটে কার্যকর করারোপ করতে হবে বলে মনে করেন আগামী বাজেটে সিগারেটে করারোপের ক্ষেত্রে কোনো অজুহাতেই আপসের সুযোগ নেই বলে মনে করেন তিনি।

প্রেক্ষাপট উপস্থাপনায় উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী বলেন, চলতি অর্থবছরে মাঝামাঝি এসে সকল স্তরের সিগারেটের দাম ৮ থেকে ২০ শতাংশ বাড়িয়েছে রাজস্ব বোর্ড। এতে করে একদিকে সরকারের বাড়তি রাজস্ব পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে সিগারেটে বিক্রির পরিমাণও কমেছে। আগামী অর্থবছরেও এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশের বিভিন্ন তামাক-বিরোধী নাগরিক সংগঠন আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজারে বিক্রিত সিগারেটের স্তর সংখ্যা চারটি থেকে কমিয়ে তিনটি করার দাবি জানিয়েছে। নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটকে একীভূত করে ঐ নতুন স্তরের সিগারেটের একেকটি শলাকার দাম ৯ টাকা নির্ধারণের পরামর্শ এসেছে এই নাগরিক সংগঠনগুলোর দিক থেকে।

সিগারেটের দাম বাড়ানো এবং এর ওপর কার্যকর করারোপের প্রস্তাব এলেই স্বার্থানেষী মহল নানা রকম অপতথ্য প্রচার করে থাকে বলে জানান ইউএনডিপি-এর সিনিয়র অ্যাডভাইজার এস. এম. মঞ্জুর রশিদ।

তিনি বলেন, সিগারেট বিক্রি কমে গেলে কর্মসংস্থানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হলেও প্রকৃত পক্ষে তামাক শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকরা দেশের মোট কর্মে নিয়োজিত নাগরিকের সংখ্যার মাত্র ০.২ শতাংশ।

তামাকবিরোধী গবেষক ও সাংবাদিক সুশান্ত কুমার সিনহা বলেন, সিগারেটের ওপর কার্যকর করারোপের পাশাপাশি সিগারেট কোম্পানিগুলোর কর ফাঁকি ঠেকানোর দিকেও বিশেষ নীতি-মনোযোগ নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজনীয়। গোলটেবিল বৈঠকে আরও আলোচনা করেন- আদিবাসী অধিকার কর্মী দীপায়ন খীসা, আরডিএফ-এর সদস্য সচিব এম গোলাম মোস্তফা, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশে-এর সিনিয়র ডিরেক্টর চন্দন জেড. গোমেজ এবং দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৈঠক সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ড. মাহবুব হাসান।

(ওএস/এএস/মে ১০, ২০২৫)