ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

অপারেশ সিঁদুর ভারতের একটি বড় সাফল্য

২০২৫ মে ১৫ ১৭:৫২:০৪
অপারেশ সিঁদুর ভারতের একটি বড় সাফল্য

শিতাংশু গুহ


ধীরে ধীরে সত্যটা বের হচ্ছে। ভারত-পাকিস্তান ৩দিনের সংঘাতে পাকিস্তানের সবগুলো ট্যাকটিক্যাল নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড এবং নিউক্লিয়ার কমান্ড কন্ট্রোল ধ্বংস হয়ে গেছে। নন টেকনিক্যাল ওয়ারহেডগুলোর তেজষ্ক্রিয়ার কারণে আগামী অর্ধ-শতাব্দী ব্যাংকার থেকে বের করা যাবেনা। অর্থাৎ ওগুলো কবর হয়ে গেছে। এসব কারণে পাকিস্তানকে এখন ‘পারমাণবিক শক্তিধর’ দেশ বলা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। ঠিক একারণেই পাকিস্তান ট্রাম্পের কাছে ধর্ণা দেয়। একই কারণে হয়তো মোদী বলেছেন, ‘পারমাণবিক ব্লাফ’ কাজে লাগবে না। পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভারত তছনছ করে দেয়, এফ-১৬ যেখানে রক্ষিত ছিলো সেগুলো বের হওয়ার সুযোগ ছিলোনা।

পাকিস্তানের মিলিটারি ডিজি তাই রাত সাড়ে ৩টায় ভারতকে ফোন করে যুদ্ধ বন্ধের অনুরোধ করে। ভারত শর্ত-সাপেক্ষে তাতে সম্মত হয়। অষ্ট্রিয়ার যুদ্ধ বিশারদ ইতিহাসবিদ টম কুপার তাঁর ব্লগে বলেছেন, অপারেশন সিঁদুর ভারতের একটি বড় সাফল্য। তিনি বলেছেন, ভারত পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারে আঘাত হেনেছে, যা অভাবনীয়। পাকিস্তানের উপায় ছিলোনা পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার। তিনি বলেন: সবাই জানে পাকিস্তান জ্বিহাদীদের লালন-পালন করে, এদের ৯টি সন্ত্রাসী স্থাপনায় সফল আক্রমন একটি বড় ঘটনা। একজন ক্রিষ্টাল ফ্লিপো লিখেছেন, খোলা জল পান করবেন না, এতে ক্যান্সার হতে পারে। প্যাকেটজাত খাবার খান। রেডিয়েশন বালির মত, স্পর্শ করবেন না, বারবার হাত ধুয়ে ফেলুন।

এখন এটি স্পষ্ট যে, পাকিস্তানের একটি ক্ষেপণাস্ত্র বা এমনকি ড্রোন ভারতে আঘাত করতে সক্ষম হয়নি। পক্ষান্তরে ভারতের একটি ক্ষেপণাস্ত্রও পাকিস্তান আটকাতে সমর্থ হয়নি। পাকিস্তান একদা এর বিমান বাহিনী নিয়ে গর্ব করতো, সেটি ধুলায় মিশে গেছে। ভারত ইচ্ছে করলে পাকিস্তানের যেকোন স্থাপনায় বিমান আক্রমন করতে পারতো। ‘অপারেশন সিঁদুর’-ভারতের সফল সমর অভিযান, নির্ভুলভাবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসীদের আস্তানা গুড়িয়ে দিয়েছে। পাকিস্তান মিথ্যাচারে পারদর্শী, এবং তাদের সকল ন্যারেটিভ ভুয়া। ১৯৭১ সালের ১৫ই ডিসেম্বরেও পাকিস্তান বলছিলো যে, তারা ভারতকে পর্যুদস্ত করে দিয়েছে, অথচ ১দিন পর ৯৩ হাজার সৈন্যের আত্মসমর্পণ করে। ২০২৫-এ পাকিস্তানের একই ন্যারেটিভ, এদের লজ্জ্বা নেই?

ট্রাম্পের হাতে-পায়ে ধরে, গভীর রাতে ভারতকে ফোন করে কান্নাকাটি করে যুদ্ধবিরতি’র পরপরই ‘আমরা জিতেছি’ শ্লোগান, বিজয় উদযাপন করলেও পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর ‘বডি ল্যাঙ্গুয়েজ’ কিন্তু বলছে, ‘এ যাত্রায় বেঁচে গেছি’! পাকিস্তান তো নাহয় ঝড়ের পর একটু আশ্বস্ত হচ্ছে, কিন্তু ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মত বাংলাদেশের তৌহিদী জনতা, রাজাকার-আলবদরের উত্তরসূরীরা, পাকিস্তানপন্থীরা লাফাচ্ছে কেন? পাকিস্তানের ভেতরে একটি বিরাট জনসংখ্যা পাকিস্তান থেকে মুক্তি চায়, বাংলাদেশের ভেতরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তি পাকিস্তানের ধ্বংস চায়, কারণ এঁরা ধর্মের নামে পাকিস্তানের বর্বরতা দেখেছে। বালুচ, আফগানিস্তান পাকিস্তানের ধ্বংস চায়। প্রবাসে পাকিস্তান প্রেমী একটি গোষ্ঠী আছে। পাকিস্তান সন্ত্রাসী রাষ্ট্র, পাকিস্তানের সমর্থকরা পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয়।

তুরস্ক নিয়ে পুরো ভারত এখন সোচ্চার, দাবি উঠেছে ‘বয়কট তুরস্ক’। ভারতীয়রা ব্যাপকভাবে তুরস্ক সফরে যায়, বলা হচ্ছে, এ খাতে তুরস্কের আয় প্রায় ৬বিলিয়ন ডলার। ভারত-তুরস্ক ব্যবসা-বাণিজ্য কম নয়, ভারত হয়তো তুরস্কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে তুরস্ক শুধু যে পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছে তা নয়, পাকিস্তান ৩৫০টি তুর্কী ড্রোন ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে, এবং তুর্কি সৈন্যরা এগুলো উৎক্ষেপণে সাহায্য করেছে। যুদ্ধে ২জন তুর্কী সৈন্য নিহত হয়েছে, যার প্রমান ভারতের কাছে আছে। যুদ্ধের শুরুর দুইদিন আগে তুরস্কের জাহাজ করাচীতে ভীড়ে, ঐ জাহাজে সমরাস্ত্র ও সৈন্য ছিলো। পাকিস্তান বলেছে, তাদের হাতে কোন ভারতীয় পাইলট আটক নেই। মোদী বলেছেন, পাকিস্থানের সাথে শুধু টেররিজম এবং পিওকে নিয়েই আলোচনা হতে পারে।

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।