ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

প্রচ্ছদ » জাতীয় » বিস্তারিত

জবির আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি জানালেন উমামা ফাতেমা

২০২৫ মে ১৫ ১৮:০২:৪৯
জবির আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি জানালেন উমামা ফাতেমা

স্টাফ রিপোর্টার : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন করেছেন।

পোস্টে তিনি লেখেন, আমি উমামা ফাতেমা, একজন ছাত্র নেতৃত্ব ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একজন অংশীদার হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন করলাম।

তিনি আরও লেখেন, জুলাই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি প্রাঙ্গণ থেকে আমরা প্রতিদিন মিছিল করতাম। এই মিছিলে প্রতিদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুবিশাল মিছিল আসত। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন ভাই জুলাই আন্দোলনে শহীদ হয়েছে।

‘কিন্তু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এই অবদানকে সবসময় উপেক্ষা করা হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে ছাত্রদের দিনের পর দিন হলের জন্য আন্দোলন করতে হয়েছে। এই সরকারের আমলেও আমরা জগন্নাথের প্রাণের দাবিকে গুরুত্ব দিতে দেখছি না। একটি বিশ্ববিদ্যালয়, এরিয়াতে আবাসিক হল ছাত্রদের অধিকার। সেটার জন্য ২০ বছর ধরে আন্দোলন করতে হবে কেন? আশা করি, দ্রুত এই ৩ দফা দাবি মেনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংকট সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।’

তাদের ৩ দফা দাবি

১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে।

২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে।

৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।

উমামা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যৃলয়ের আন্দোলন শুধু ছাত্রদের আন্দোলন না। ভিসি, প্রক্টর থেকে শুরু করে সকল শিক্ষক, কর্মচারী এই আন্দোলনে যুক্ত। গতকাল যমুনাতে যাওয়ার সময় ছাত্র-শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ করা হয়, টিয়ারশেল ছোঁড়া হয়।

প্রায় ২৪ ঘণ্টা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাকরাইলে অবস্থান করছে। অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় অনেক শিক্ষার্থী ক্লান্ত হলেও আন্দোলন থেকে সরেননি কেউ। কেউ কেউ রাতভর রাস্তায় ঘুমিয়ে আজ সকালেও অবস্থান করছেন।

গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লং মার্চে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী। লং মার্চটি গুলিস্তান, মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসলে ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে লং মার্চে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর। এ সময় ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানি নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

পরবর্তীতে রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ সামনে বিফ্রিং করতে আসেন। বিফ্রিংয়ে অসন্তুষ্ট হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজকে উদ্দেশ করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বক্তৃতার একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে বোতল ছুড়ে মারেন একজন। উপদেষ্টা বিফ্রিং বন্ধ করে চলে যান।

এদিকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনও কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন শিক্ষার্থীরা।

(ওএস/এসপি/মে ১৫, ২০২৫)