প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত
রাজবাড়ীতে জমজমাট কোরবানির পশুর হাট
২০২৫ জুন ০২ ১৫:৫৪:২০
একে আজাদ, রাজবাড়ী : পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জমজমাট রাজবাড়ীর গরু-ছাগলের হাটগুলো। সাধ্যের মধ্যে পছন্দের কোরবানির পশু কিনছে ক্রেতারা। তবে দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। হাটগুলোতে নিরাপত্তার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন। হাটে অসুস্থ গবাদিপশুর চিকিৎসায় রয়েছে মেডিকেল টিম। জেলায় এবার ২৩টি স্থানে কোরবানির পশু কেনাবেচার হাট বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি স্থায়ী ও সাতটি অস্থায়ী হাট রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য ৫৫ হাজার ৭৫০টি পশুর চাহিদা রয়েছে। কোরবানির উপযোগী ৮৯ হাজার ৫৬৬টি পশু ক্রয় করা হয়েছে। ফলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্তত ৩৩ হাজার ৮১৬টি পশু দেশের বিভিন্ন এলাকার কোরবানির পশুর হাটে পাঠানো যাবে। এ বছর জেলার সাত হাজার ৭০৮টি ছোট-বড় খামারে কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়েছে।
আরও জানা গেছে,জেলার সাত হাজার ৭০৮ টি ছোট-বড় খামারে এ বছর কোরবানি যোগ্য গরু প্রস্তুত হয়েছে ৩০ হাজার ১১৭টি, মহিষ ২৩২টি, ছাগল ৫৮ হাজার ৭৪০টি, ভেড়া ৪৭৩টি ও অন্যান্য পশু চারটি প্রস্তুত হয়েছে।
সরেজমিনে রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুরে পৌর পশুরহাট ঘুরে দেখা গেছে,জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাক, নসিমন, ভটভটিসহ নানান রকম যানবাহনে হাটে পশু নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। হাটে মাঝারি গরুর সংখ্যা বেশি। বেশিরভাগ ক্রেতার অভিযোগ, গরু-ছাগলের চড়া দাম হাঁকা হচ্ছে। ফলে হাট ঘুরে পশু না কিনেই ফিরে যেতে হচ্ছে অনেক ক্রেতাকে।
কোরবানির জন্য ছাগল কিনতে আসা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন,হাটে পর্যাপ্ত গরু ছাগল আছে। তবে দাম একটু বেশি চাইছেন বিক্রেতারা। দেখি আরও কয়েক দিন বাকি আছে। দরদামে মিললে কিনব।
গরু কিনতে আসা ক্রেতা শফিকুল মল্লিক বলেন, গত কয়েক দিন ধরে আমরা জেলার কয়েকটি হাটে গরু দেখেছি। তবে এখনও কাঙ্ক্ষিত দামে গরু মেলেনি। দাম একটু বেশি চাইছেন বিক্রেতারা। প্রকৃত খামারির তুলনায় হাটে ব্যাপারী বেশি।
গরু ব্যবসায়ী করিম মোল্লা বলেন, গরু যে দামে কেনা, তার থেকেও দাম কম বলছে ক্রেতারা। গরু অনুযায়ী গরুর দাম অনেক কম বলে এজন্য তেমন বেচাকেনা হচ্ছে না। দেশী ও মাঝারি গরু কেনা লোকের সংখ্যা এখানে বেশি।
আরেক বিক্রেতা শফিক হোসেন বলেন,সাতটি গরু এনেছিলাম, দু’টি বিক্রি করেছি। বড় গরুর চাহিদা কম এখানে। তবে কেনার থেকে দাম শোনার লোকের সংখ্যা বেশি।
ছাগল বিক্রেতা জাহিদ শেখ বলেন, চারটি ছাগল এনেছিলাম। দু’টি বিক্রি করেছি। আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় ক্রেতা কম, তাই ফিরে যাচ্ছি। হাটে বড় ছাগলের ক্রেতা নেই।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস জানান, গরুর হাটে আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করছে। প্রাকৃতিক খাবারে গরু পালনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোনো হরমোন বা কেমিক্যাল যাতে ব্যবহার না করে, তারও পরামর্শ দিয়েছি আমরা। আমার বিশ্বাস যে তারা এটা কখনও করবে না। আজকের এই হাটে যে গরুগুলো উঠেছে সেগুলো সম্পূর্ণ সুস্থ গরু। আমরা এসে অসুস্থ কোনো গরু দেখতে পাইনি। হাটে দেশি গরুর সংখ্যাও বেশি।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত পশুহাট থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত পুলিশ ওই হাটে থাকবে এবং টহল দিবে। চাঁদাবাজি ও হয়রানি যাতে না হতে পারে, সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে। জাল নোটের কোনো বিষয় যদি কারও নজরে আসে, তাহলে থানা পুলিশকে জানালে আইনগত যে ব্যবস্থা সেটা গ্রহণ করব।
(একে/এএস/জুন ০২, ২০২৫)