প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত
হাসপাতালের কক্ষে ঢুকে মেডিকেল অফিসারকে মারপিট
২০২৫ জুন ১০ ১৭:২১:৪৪.jpg)
তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে কোটালীপাড়া ১০০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কক্ষে ঢুকে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার অনুপম বাড়ৈকে মারপিট করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মীরা সোহেল হাওলাদার (২৫)নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। সোহেল হাওলাদার কোটালীপাড়া পৌর শহরের ফেরধরা গ্রামের আজিজ হাওলাদারের ছেলে।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে কোটালীপাড়া ১০০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। ওই চিকিৎসককে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে হাসপাতালের কর্মচারীরা তাৎক্ষনিকভাবে চিকিৎসা সেবা বন্ধের ঘোষনা দেন । পরে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মৃদুল কুমার দাসের আশ্বাসে কর্মচারীরা কর্মসূচী প্রত্যাহার করে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখেন।
সোহেল হাওলাদার জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) তার গর্ভবতী স্ত্রী ছাদিয়া খানমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পরে সেখানে কোন চিকিৎসক ছিল না। এতে ডেলিভারি করাতে দেরি হয়। তার স্ত্রীর ছাদিয়া খানম মৃত বাচ্চা প্রসব করে । চিকিৎসক আসতে দেরি হওয়ায় তার স্ত্রীর মৃত বাচ্চা প্রসব করেছে। এমন অভিযোগে এনে তিনি আজ মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা: অনুপম বাড়ৈকে জরুরী বিভাগের রুমের দরজা আটকিয়ে মারধর করেছেন বলে জানিয়েছেন।
হামলার শিকার মেডিকেল অফিসার ডা: অনুপম বাড়ৈ বলেন, আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্মরত ছিলাম। হঠাৎ একজন অপরিচিত লোক রুমে এসে দরজা বন্ধ করে আমাকে মারধর শুরু করে। আমার চিৎকার শুনে হাসপাতাল কর্মীরা দরজা ভেঙে আমাকে উদ্ধার করেন। শুনেছি সোহেল হাওলাদার কয়েক দিন আগে তার গর্ভবতী স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। তার স্ত্রীর আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে দেখা গেছে হাসপাতালে আনার ৪ দিন আগে তার বাচ্চা গর্ভেই মারাগেছে। এই রোগীকে আমি চিনি না। তাকে আমি চিকিৎসা করিনি।
সোহেল হাওলাদারের স্ত্রী ছাদিয়া খানম বলেন, আমি সন্তান প্রসব করতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে কোন ডাক্তার পাইনি। ডাক্তার আসতে দেরি করায় আমার বাচ্চা মারা গেছে । এ কারণে আমার স্বামী ক্ষিপ্ত ডাক্তারকে মারধর করতে পারে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মৃদুল কুমার দাস বলেন, একজন লোক এসে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক অনুপম বাড়ৈকে মারধর করে। মারধরের পরে কোটালীপাড়া থানা থেকে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়। আমরা প্রচলিত আইনি তার বিরুদ্ধে মামলা করব।
কোটালীপাড়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা: অনুপম বাড়ৈকে মাধরের ঘটনায় সোহেল হালদার নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দারের প্রস্তুতি চলছে। ওসি আরো বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ওই যুবকের স্ত্রীর গর্ভের সন্তান প্রসবের ৩/৪ দিন আগেই গর্ভে মারা যায়।
(টিবি/এসপি/জুন ১০, ২০২৫)