ঢাকা, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

লন্ডনের বৈঠক: কি জন্ম নেবে- ফুল না শূল?

২০২৫ জুন ১৩ ১৬:২৭:৪৪
লন্ডনের বৈঠক: কি জন্ম নেবে- ফুল না শূল?

মীর আব্দুল আলীম


বাংলাদেশের গণতন্ত্রের রক্তাক্ত ফুলবাগানে শুক্রবার, ১৩ জুন লন্ডনের সকালের আলো থেকে কি জন্ম নেবে? ফুল না শূল, তা ঠিক করবে এই সময়, এই মাটি ও এই আলোচনার নিরব দৃশ্যপট। লন্ডনের নরম সকাল। চারপাশে বৃক্ষপত্রে শিশিরবিন্দুর মতো জমে থাকা উত্তাপহীন এক রাজনৈতিক স্পন্দন। কিন্তু তারই মধ্যে বাংলাদেশের রাজনীতির কঠিন সকাল এসে হাজির লন্ডনের এক অভিজাত ঠিকানায়। সেই ঘরে বসতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের দুই মেরুর দুই পুরুষ- একপাশে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস; অন্য পাশে তারেক রহমান। দুজন দুই মেরুতে, দুই ইতিহাসে, দুই স্বপ্নে। কিন্তু আজ এই দুই মেরু একই বৃত্তে ঘূর্ণিত হতে চলেছে। এ বড় সহজ সাধনার কাজ নয়; এ এক ইতিহাসের অস্থির ঢেউয়ে পা রাখার শঙ্কিত প্রয়াস।

ড. ইউনূস — মাইক্রোক্রেডিটের জনক, শান্তির নোবেল বিজয়ী; বাংলাদেশের নতুন এক রাজনৈতিক পরীক্ষার সূক্ষ্ম কারিগর। অন্যদিকে তারেক রহমান- ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার টানে প্রবাসে থেকেও দেশের রাজনীতির মাঝির দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। তাদের সাক্ষাৎ নিছক সৌজন্যবিনিময় কি? নাকি অদৃশ্য রাজনীতির সেই চোরাস্রোতের নবজাগরণ? এই বৈঠকের কোনো লিখিত এজেন্ডা নেই। এই অনুপস্থিতি একদিকে স্বস্তি দেয়, অন্যদিকে প্রশ্ন জাগায়। ড. ইউনূসের মুখপাত্র শফিকুল আলম বলেন, “কোনো নির্দিষ্ট ফরম্যাট নেই।” তার মানে আলোচনা অনির্ধারিত কিন্তু অনির্দেশিত নয়। আলোচনা ঘুরপাক খেতে পারে জাতীয় নির্বাচন, সময়সূচি, কাঠামোগত সংস্কার আর বহু প্রতীক্ষিত ‘জুলাই চার্টার’-এর চারপাশে। বিএনপি একে দেখছে সম্ভাবনার সূক্ষ্ম আলোর রেখা হিসেবে- রাজনৈতিক অন্ধকারে এক নরম প্রভাতের আভাস।

রাজনীতির নদী এখানে থেমে নেই। এর স্রোত অনেকবার মোড় নিয়েছে। সেই স্রোতে এ বৈঠক কি হয়ে উঠবে নতুন মোড়ের গল্প? না কি হয়ে উঠবে, কাগজে লেখা সেইসব অপূর্ণ অধ্যায়ের আরেকটি অস্পষ্ট পৃষ্ঠা? আজ তাই লন্ডনের আকাশের রোদলা আলোয় বাংলাদেশের ভবিষ্যত জেগে ওঠার এক নিঃশব্দ চেষ্টা। এই সাক্ষাৎ হতে পারে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ঘেরা পথে একটি নতুন মোড়। এই বৈঠক থেকে বাস্তব ফলাফল আদৌ আসবে কি না, তাও নিশ্চিত করে বলা যাবে না। কিন্তু এ একপ্রকার ইঙ্গিত-বাংলাদেশের রাজনীতিতে আড়ালে একটি নতুন সমীকরণ প্রস্তুত হচ্ছে। হয়তো অচিরেই আমরা দেখতে পাব একাধিক ধাপে এমন আরও আলোচনা। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্র অনেকাংশে নির্ভর করছে এমন সংলাপ ও সমঝোতার ওপর। ইউনূস-তারেক বৈঠক যদি আন্তরিকতা এবং বাস্তবতা দিয়ে পরিচালিত হয়, তবে এটি হতে পারে একটি অবরুদ্ধ গণতান্ত্রিক পথের পুনরাবিষ্কার। রাজনীতির রসায়ন কখনও সাদামাটা হয় না। বাংলাদেশে তো নয়ই। নানা ঘটনা একদিকে যেমন দৃশ্যমান, তেমনি এর নেপথ্যে চলে অদৃশ্য কূটনীতি, অঙ্ক কষা হয় বড় খাতায়। সেই অঙ্কেই এবার নতুন সংযোজন-লন্ডনে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের সম্ভাব্য বৈঠক।

জল্পনা কিন্তু শুরু হয়েছে দিনক্ষণ-১৩ জুন, শুক্রবারের আগেই। প্রশ্ন হলো দু’জনের বৈঠক কি সত্যিই সংকট সমাধানে পথ দেখাবে? অতীতে সেসব আলোচনায় কূটকৌশল ও প্রত্যাশার ফাঁক-ফোকর চিহ্নিত করে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন: লন্ডন বার্তা নয়, বরং আচার-আচরণ ও ফলেই বিচার্য। ড. ইউনূস ও বিএনপি প্রধানের এই বৈঠক শুধুমাত্র সংবাদ শিরোনাম নয়-বরং এটি জনগণের বুকজুড়ে নতুন প্রত্যাশার সঞ্চার করতে পারে। তবে সে প্রত্যাশা বাস্তবে রূপ পায় কি না, সেটাই দেখার বিষয়। এখন শুধু সময়ই বলবে-লন্ডন হবে শনির দিক, নাকি আবার শঙ্কার ঠিকানা? এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক সমঝোতার প্রক্রিয়া যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে তা বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংঘাতের অবসানে এক বড় মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। যদি ইউনুস-তারেক বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসা যে কোনো সমঝোতা দেশের সকল রাজনৈতিক শক্তিকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কাঠামোয় নিয়ে আসতে পারে, তবে এর ইতিবাচক প্রতিফলন শুধু রাজনীতিতেই নয়, দেশের অর্থনীতি, সুশাসন ও সামগ্রিক স্থিতিশীলতায়ও পড়বে।

এ পথ মোটেই সহজ নয়। এর পেছনে রয়েছে বহুস্তরীয় জটিলতা, রাজনৈতিক দলের মতপাথ্যক্য, অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক চাপ, পারস্পরিক অবিশ্বাস এবং অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা। সকল প্রকার শত্রুতা, সংঘাত ও ক্রিমিনালাইজেশন অব পলিটিক্সের প্রেক্ষাপটে এই ধরণের বৈঠক বাস্তব ফল দিতে হলে সকল পক্ষের আন্তরিকতা সবচেয়ে বড় শর্ত। শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেতৃত্ব নয়; সেনা-বেসামরিক প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজসহ প্রত্যেকটি স্টেকহোল্ডারকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি মধ্যস্থতা বা নরম-চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে দুই পক্ষকে সমঝোতায় আসতে উৎসাহিত করে, তাহলে সম্ভাবনা অনেক বাড়বে।

পাশাপাশি, আঞ্চলিক শক্তি ভারতকেও এখানে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। কারণ, স্থিতিশীল বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকটি কেন তাৎপর্যপূর্ণ? বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বহুমাত্রিক অচলাবস্থার মধ্যে ড. ইউনুস আশার আলো দেখাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশের বাইরে আন্তর্জাতিক মহলে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে উচ্চকণ্ঠ, অন্যদিকে তারেক রহমান বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ক্ষমতার কেন্দ্রে। দেশে নানা ইসুতে আন্দোলন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি নেতাদের কঠোর বক্তব্য, রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দুই ব্যক্তির বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বটে! অনেকের মতে, এ বৈঠক ভবিষ্যতে বৃহত্তর কোনো সমঝোতা বা আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার ইঙ্গিতও দিতে পারে।

বৈঠকটি ঘিরে নানা আলোচনা থাকলেও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি আসেনি। তবে ঘনিষ্ঠ সূত্রের মাধ্যমে যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, আলোচনায় নিম্নোক্ত বিষয়গুলো প্রাধান্য পেতে পারে: ১. দেশের গণতন্ত্র ও দ্রুত নির্বাচন- বিএনপি প্রধান তারেক রহমান ড. ইউনুসের কাছে দ্রুত নির্বাচন দাবি করতে পারেন। বর্তমান আন্তবর্তীকালনি সরকার- জনগনের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সংকল্পবদ্ধ। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগ শাসন আমলেরর রাতের ভোট দিনের ভোট হতে পারে এটারও শংকা আছে। তাই সরকার প্রধান সংস্কারের বিষয়টি সামনে আনতে পারেন এবং সে জন্য নির্বাচন কিছুটা বিলম্ব হতে পারে। এ বিষয়টি মানা না মানা নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা হতে পারে।

ড. ইউনুস কম কথা বললেও তার নীতিতে অবিচল মনে হয়। হেঁসে কথা বললেও বিচক্ষনতার ঘাটতি নেই তাঁর। ব্যক্তিত্বেরতো বটেই! সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরের নির্বাচনের বিসয়টি এলে তিনি তা কতটুকু গুরুত্ব দিবেন সেটা দেখার বিষয়। এ প্রেক্ষাপটে দু’জনের আলোচনায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কীভাবে অন্তত গ্রহণযোগ্য মানে ফিরিয়ে আনা যায়, সেই আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলের অবস্থানকে কার্যকর করতে উভয়েই সমন্বয় করতে পারেন। বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকটের স্থায়ী সমাধান হিসেবে আগাম কোন জাতীয় সংলাপ হতে পারে। যা শুধু বিদেশি চাপ বা কূটনীতি দিয়ে সম্ভব নয়- এটা দুই পক্ষই বুঝতে পারছেন। তাই ভবিষ্যতে সরকারের এবং বিএনপির কি করা উচিৎ তা নিয়ে বৈঠকে কথা হতে পারে। সংলাপ বা বোঝাপড়ার সম্ভাবনা নিয়েও দু’জন আলোচনা করেছেন বলে ধারণা।

বৈঠক ঘিরে অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সন্দেহ তৈরি হতে পারে। বিভিন্ন মহলে এমনকি জনগনের একটি আংশ এই বৈঠককে ইতিবাচকভাবে দেখার প্রবণতা নেই। অনেকেই মনে করছেন, এটি সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে দ্রুত নির্বাচনের জন্য চাপ তৈরি করার নীলনকশারই অংশ হতে পারে। নির্বাচনের সময়সূচি নির্ধারণ বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। বিএনপির প্রধান দাবি ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যেই নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। তারা মনে করে ২০১৮ সালের ভোটের মত আরেকটি ‘নির্বাচনী প্রহসন’ ঠেকাতে হলে দ্রুততার সাথে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করা জরুরি।

অপরদিকে ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার মনে করে অবকাঠামোগত ও আইনি সংস্কার ছাড়া অবিলম্বে নির্বাচন দেশকে আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলবে। তারা একটি ধাপে ধাপে সংস্কারের মাধ্যমে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছে। সময়ের এই তফাতই মূলত পুরো আলোচনার সবচেয়ে বড় গলদ। উভয়পক্ষই তাদের অবস্থানে অনড় থাকলে সমঝোতা অসম্ভব হয়ে পড়বে। দ্রুত নির্বাচন দিলে সরকার এটিকে “বিএনপির ফাঁদ” মনে করে। আর বিলম্বিত নির্বাচনকে বিএনপি দেখে সরকারের ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা হিসেবে। এই টানাপোড়েনের অবসান ছাড়া আলোচনার কোনো স্থায়ী ফলাফল সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা আর সংঘাতময় রাজনীতির ক্লান্তিতে ভুগছে। তারা স্থিতিশীলতা চায়, স্থায়ী শান্তি চায়। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আস্থাহীনতা, চুক্তি ভঙ্গের অতীত অভিজ্ঞতা তাদের মধ্যে সন্দেহও তৈরি করে। এই আলোচনার প্রাথমিক খবর জনগণের মনে যেমন আশার আলো জাগাচ্ছে, তেমনি এটিকে অনেকে দেখছে ‘পুরনো খেলোয়াড়দের নতুন নাটক’ হিসেবেও। তাই এই বৈঠক থেকে যদি কোনো আন্তরিক ও কার্যকর রূপরেখা বেরিয়ে আসে, তাহলেই জনগণের আস্থা বাড়বে। অন্যথায়, এটি আরেকটি ব্যর্থ প্রচেষ্টায় পরিণত হলে হতাশা আরও ঘনীভূত হবে।

লন্ডনের ধূসর আকাশের নীচে ইউনুস-তারেক বৈঠকের আলাপ যেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক জলাভূমিতে ছুড়ে দেওয়া এক নতুন ঢিল। ঢেউ উঠেছে, কিন্তু তার দিক-দিশা এখনো অস্পষ্ট। বহু প্রশ্নের জন্ম হলেও উত্তর আপাতত গা ঢাকা দিয়ে আছে কূটনৈতিক কুয়াশায়। তবু এটুকু স্পষ্ট হয়ে উঠছে- দেশের রাজনীতি এখন আর শুধু ঢাকার দোতলা কার্যালয়ের আলো-অন্ধকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। গ্লোবাল মঞ্চেও যেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সংকট এক নতুন মাত্রায় প্রবেশ করছে।
এই আলোচনার শেষ কোথায়? সমঝোতার টেবিলে না কি নতুন সংঘাতের মুখোমুখি? সময় তার নিজের ছন্দে এগোবে। কিন্তু ইউনুস-তারেক বৈঠকের রাজনৈতিক ব্যাকরণে যে নতুন উপপাদ্য উঠে এসেছে, তাকে উপেক্ষা করার উপায় নেই। এখানে রাজনীতি মানে কেবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, কখনও তা পরস্পরের বোঝাপড়ার শিল্পও হয়ে ওঠে। নেতৃত্বের সংজ্ঞা যেন নতুন রূপ নিচ্ছে- যেখানে রণকৌশল, কৌশলী নীরবতা ও আন্তর্জাতিক সমর্থন একই সমান্তরালে হাঁটে। এই কি তবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ‘প্যারাডাইম শিফট’-এর সূচনা? তা ভবিষ্যতের পাতাই বলবে। তবে আপাতত, লন্ডনের বৈঠক ঢাকার রাজনীতিতে অজানা উন্মাদনার সুর বয়ে এনেছে- যার রেশ হয়তো বহুদিন থেকেই যাবে।

লেখক: সাংবাদিক, সমাজ গবেষক, মহাসচিব-কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।