ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

প্রচ্ছদ » ক্যাম্পাস » বিস্তারিত

গোপালগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

২০২৫ জুন ১৭ ১৮:৪০:২৫
গোপালগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, ক্লাস রুম ও ল্যাব সংকট নিরসন ও বাজেটের সুষ্ঠু বাস্তবায়নসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল, স্মারকলিপি পেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য ৭ দিনে আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সমানে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।

এ সময় আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যমের ঠাই নাই', 'ভিসি বাংলো ভেতরে, শিক্ষার্থীরা কেন বাহিরে' 'এক দুই তিন, আর কত দিন', 'একাডেমিক ভবন কই, প্রশাসন জবাই চাইসহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা দাবী সম্বলিত একটি স্মারকলিপি উপাচার্যের কাছে প্রদান করে।

স্মারকলিপি প্রদান শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদ আলী তোহা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে রয়েছে। যে সরকার বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জায়গায়কে সমান নজরে দেখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এই সময় যদি বিশ্ববিদ্যালয় এত অবহেলা বা বৈষম্যের শিকার হয় তাহলে পরবর্তীতে অবস্থা আরো কতটা ভয়াবহ হবে।

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে হল সংকট, ক্লাস রুম সংকট, মেইন গেট নেই, শিক্ষক সংকট এগুলো দীর্ঘ দিনের দাবি শিক্ষার্থীদের। এই মৌলিক অধিকারের জন্য বার বার কেন শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম ছেড়ে রাজপথে আসতে হবে? এতসব সমস্যা তারপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কার্যকর কোন পদক্ষেপ দেখতে পাওয়া যায় না কেন? আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবিগুলো আমলে নিয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিবেন। আমাদের দাবিগুলো পূরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হলো। ৭ দিনের মধ্যে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি না হলে কঠোর আন্দোলন যেতে বাধ্য হবে শিক্ষার্থী।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী দুর্জয় শুভ, বিএমবি বিভাগের শিক্ষার্থী মঈনুদ্দিন খান সিফাত, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নিঘাত রৌদ্র, ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নূপুর রায় দীপা, নওরীন নীরা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

শিক্ষার্থীদের ৫ দাবি

১. অসমাপ্ত কাজসমূহ দ্রুত শেষ করতে হবে। ন্যূনতম ১০০ একর ভূমি অধিগ্রহণ, একাডেমিক-০২-বিল্ডিং এবং ফ্যাকাল্টি বিল্ডিংএ সম্প্রসারণ, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন সংকট নিরসনে পর্যাপ্ত হল নির্মান, টিএসসি, অডিটোরিয়াম, জিমনেশিয়াম তৈরীর কাজ শুরু এবং ক্যাফেটেরিয়া, লাইব্রেরীর, মেডিকেল সেন্টার উন্নয়নে অতিদ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। হল নির্মানের কাজ সমাপ্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দিতে হবে। সমস্ত কাজের টেন্ডার সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করতে হবে।

২. প্রত্যেক বিভাগে ন্যূনতম ২০ জন কর্মরত শিক্ষক, পর্যাপ্ত ল্যাব এবং অফিস এসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দিতে হবে। পর্যাপ্ত শিক্ষকের জন্য উচ্চ শিক্ষায় বিদেশ গমনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে টিচিং এসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দিতে হবে।

৩. শিক্ষার্থীদের সকল তথ্য, রেজাল্ট, লেনদেন অনলাইন ভিত্তিক করতে এবে। ডিজিটাল লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

৪. বিগত সময়ের দূর্নীতিবাজদের শাস্তির আওতায় আনতে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে, লুট হয়ে যাওয়া অর্থ ফেতর আনতে পদক্ষেপ নিতে হবে। পরবর্তী বাজেটের স্বচ্ছতায় প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের বাজেট বন্টনে সংশ্লিষ্ট করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য প্রকাশ করতে হবে।

৫. দ্রুত সময়ে সমাবর্তনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। ছাত্র সংসদ ঘোষণা করতে হবে। রেজিস্ট্রার গ্র‍্যাজুয়েট সার্কুলার প্রদানের মাধ্যমে রিজেন্ট বোর্ডে ৪ জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করতে হবে। ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

(টিবি/এসপি/জুন ১৭, ২০২৫)