ঢাকা, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

সাতক্ষীরায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ৫২৪৫তম আবির্ভাব তিথি পালিত

২০২৫ আগস্ট ১৬ ২০:১১:৫১
সাতক্ষীরায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ৫২৪৫তম আবির্ভাব তিথি পালিত

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : মঙ্গল শোভাযাত্রা, পূজা অর্চনা ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরায় উদযাপিত হয়েছে ভগবান শ্রী শ্রীকৃষ্ণের ৫২৪৫ তম আবির্ভাব তিথি বা শুভ জন্মষ্টমী।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে শনিবার সকালে পুরাতন সাতক্ষীরা মায়ের বাড়িতে পূজা অর্চনার আয়োজন করা হয়।

দুপুর ১২টায় জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহসভাপতি ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা স্বপন কুমার শীলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেব বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহম্মেদ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিথুন সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রিপন কুমার বিশ্বাস।

প্রধান অতিথি বলেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শুধু একটি বিশেষ ধর্মের নয়, সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে কাজ করে গেছেন।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি ও জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি বিশ্বজিৎ কুমার সাধু, জেলা মন্দির সমিতির সভাপতি অ্যাড. সোমনাথ ব্যণার্জী, জয়প্রভু সেবক সংঘের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সুশান্ত কুমার ঘোষ, জেলা মন্দির সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জন্মাষ্টমী আয়োজক কমিটির আহবায়ক নিত্যানন্দ আমিন, সদস্য সচীব অসীম দাস সোনা, মন্দির সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রঘুজিৎ গুহ, ছাত্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুজন কুমার বিশ্বাস, জেলা মন্দির সমিতির যুব কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রীদাম দে প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ভাদ্রমাসের শুক্লা অষ্টমীতে জন্মাষ্টমী পালন করে থাকেন সনাতন ধর্মালম্বীরা। তারা বিশ্বাস করেন, পাশবিক শক্তি যখন সত্য, স্ন্দুর ও পবিত্রতাকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়, ঠিক তখনই ধর্ম সংস্থাপনের জন্য ভক্তের প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে ঈশ্বর অবতাররুপে পৃথিবীতে আসেন। ষড়গুণ অর্থাৎ শৌর্য, বীর্য, তেজ, জ্ঞান, শ্রী ও বৈরাগ্য সম্পন্ন পূর্ণাবতাররুপে প্রকাশিত হন কৃষ্ণ।

অনন্ত সর্বশক্তিমান সত্ত্বায় শাশ্বত সত্যরুপে শ্রীকৃষ্ণকে বিষ্ণুর সবচেয়ে অপরুপ অবতার বলে মনে করা হয়। সনাতন ধর্মালম্বীরা বিশ্বাস করেন জন্মাষ্টমীতে শ্রীকৃষ্ণের আরাধনায় জগতের সব সুখ লাভ হয়। মঙ্গল হয় পরিবার, দেশ ও জাতির। তাই তো শুধু মথুরা নয়, শ্রীকৃষ্ণের লীলাক্ষেত্র বৃন্দাবন থেকে শুরু করে সারা বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই তিথিটি ভক্তি ভরে স্মরন করে থাকেন। তাদের বিশ্বাস, এই দিনটিতে ব্রত পালন করলে মনের যাবতীয় সংশয় দূর হয়, সৎগুণের সঞ্চার হয় এবং এর ফলস্বরুপ মৃত্যুর পর জীবাত্মার মুক্তি হয়।

শ্রীমদ্ভগবত গীতায় বলা হয়, যে যেভাবে আমাকে আরাধনা করে আমি সেইভাবে তােিক কৃপা করি। এই বিশ্বাসেই মহাকাল ও মহাজগৎ ব্যপ্ত শ্রীকৃষ্ণের আরাধনায় মত্ত বিশ্বের সনাতনধর্মালম্বীরা। বিকেল তিনটার দিকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা মায়ের বাড়ি থেকে যাত্রা শুরু করে নবারুন মোড় হয়ে আবার মন্দিরে ফিরে আসে। ফিতে কেটে এ শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহম্মেদ।

সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ।
এ ছাড়া শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, আশাশুনি, তালা, কলারোয়া ও দেবহাটায়ও ভগবান শ্রী শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব তিথি ষাড়ম্বরে পালিত হয়েছে।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ১৬, ২০২৫)