প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত
ঈশ্বরদী মহিলা কলেজে ৪৪.০৪% শিক্ষার্থী ফেল, জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতেও ধ্বস
২০২৫ অক্টোবর ১৭ ১৮:১৪:৪৭
ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে ঈশ্বরদীর সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঈশ্বরদী মহিলা কলেজে বিপর্যয় ঘটেছে। ২০২৫ সালে কলেজটিতে প্রায় ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। যা বিগত বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ফলাফল বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। পাশাপাশি, জিপিএ–৫ প্রাপ্তির সংখ্যাতেও ঘটেছে বড় ধ্বস।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে সারাদেশে একযোগে ফলাফল ঘোষণার পর ঈশ্বরদী মহিলা কলেজের ফলাফল বিপর্যয়ের
বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, এবার ঈশ্বরদী মহিলা কলেজে পাসের হার মাত্র ৫৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ, যা বিগত বছরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। কলেজটিতে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৩৬৬ জন। এর মধ্যে ৩৬১জন সকল বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। এদের মধ্যে পাস করেছে মাত্র ২০২ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র তিনজন।
জানা গেছে, ২০২০ সালে করোনাকালে ‘অটোপাস’ পদ্ধতিতে সবাই পাস করায় ফল ভালো হয়েছিল। ২০২১ সালে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা ও পূর্ববর্তী পরীক্ষার নম্বর যোগ করে ফল প্রকাশ করা হয়, যার ফলে পাসের হার স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছিল।
এদিকে মহিলা কলেজের হতাশাজনক ফলাফলের কারণে উপজেলা জুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা নিয়েও ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন, শিক্ষকরা ক্লাসে গুরুত্ব না দিয়ে প্রাইভেট ও কোচিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন । প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ বাণিজ্য এবং বিভিন্ন পরীক্ষার কেন্দ্র ফিস এর টাকা-পয়সা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত। কলেজে এমন কয়েকজন শিক্ষক রয়েছেন, যারা ক্লাসই নেন না। অধ্যক্ষ নিজে নিরাপদে থাকতে এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৎকালীন সভাপতি শামসুর রহমান শরীফ এবং অধ্যক্ষ আফরোজা বেগমকে বিপুল অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে একজন অযোগ্য প্রভাষক থেকে সরাসরি উপাধ্যক্ষ এবং পরে অধ্যক্ষ পদটি বাগিয়ে নেন।
শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগী না হয়ে স্মার্টফোনের প্রতি বেশি আসক্তি এ ধরনের ফলাফলের অন্যতম কারণ। কিন্তু কলেজ প্রশাসনের এসব বিষয়ে মাথা ব্যথা না থাকাই ফলাফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা।
(এসকেকে/এসপি/অক্টোবর ১৭, ২০২৫)