প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত
আট কুকুরছানা হত্যায় গ্রেপ্তার নিশি জেলহাজতে
২০২৫ ডিসেম্বর ০৩ ১৮:০১:৫৮
ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ চত্বরে আটটি কুকুরছানাকে বস্তাবন্দী করে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত নিশি রহমানকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরের দিকে তাকে ঈশ্বরদী থানা থেকে পাবনা জেলহাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার জানান, রাত দেড়টার দিকে পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ঈশ্বরদী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের পশ্চিম পাশে চতুর্থ তলার পূর্ব পাশের ফ্লাট হতে নিশি রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪২৯ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে আসামীকে আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
পেনাল কোডের ৪২৯ ধারা প্রসংগে তিনি বলেন, যে কোন মূল্যের গবাদি পশু, ইত্যাদি অথবা পঞ্চাশ টাকা মূল্যের যে কোন পশুকে হত্যা বা বিকলাঙ্গ করিয়া অনিষ্ট সাধন : যদি কোন ব্যক্তি যে কোন মূল্যের হাতি, উট, গোড়া, খণ্ডর, মহিষ, ষাঁড়, গাভী বা গরু, কিংবা পঞ্চাশ টাকা বা তদূর্ধ্ব মূল্যের অন্য কোন পশুকে হত্যা করিয়া, বিষ প্রয়োগ করিয়া, বিকলাঙ্গ করিয়া বা অকেজো করিয়া অনিষ্ট সাধন করে, তাহা হইলে সেই ব্যক্তি পাঁচ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াসের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে, কিংবা অর্থদন্ডে, কিংবা এতদুভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হইবে। এই মামলায় পশু মূল্য চার হাজার টাকা দেখানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯-এর ৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন জানান, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। এতে ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি বেগমকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
এই ঘটনা গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ঘটনাটিকে “অমানবিক” উল্লেখ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা থেকে এনিমেল অ্যাকটিভিস্ট কমিটির একটি তদন্ত দল ঈশ্বরদীতে পৌঁছে তদন্ত করেছে।
অপরদিকে, নৃশংস এই ঘটনার জেরে অভিযুক্তের স্বামী হাসানুর রহমান নয়নের পরিবারকে সরকারি কোয়ার্টার ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ইউএনও মো. মনিরুজ্জামান জানান, মঙ্গলবারই তাদের বাসা খালি করতে বলা হয়েছিল এবং তারা কোয়ার্টার ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে । এই অমানবিক ঘটনায় প্রাণি সম্পদের পক্ষ হতে মামলা দায়ের হয়েছে এবং পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার করেছে। ন্যাক্কারজনক এঘটনায় উপজেলা পরিষদ তথা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত রোববার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর গেজেটেড ভবনে বসবাসরত কর্মকর্তা নয়নের স্ত্রী নিশি খাতুনের বিরুদ্ধে কুকুরছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে।
ইউএনও কার্যালয়ের কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, সোমবার সকালে কর্মকর্তা দম্পতির ছেলে তাকে জানায়, তার মা নিজ হাতে ছানাগুলোকে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। পরে পুকুর থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় আটটি মৃত ছানা উদ্ধার করা হয়।
(এসকেকে/এসপি/ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫)
