ঢাকা, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২

প্রচ্ছদ » ফিচার » বিস্তারিত

মহম্মদপুরে কুল চাষে নতুন দিগন্ত

২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১৩:৪১:২৬
মহম্মদপুরে কুল চাষে নতুন দিগন্ত

বিশ্বজিৎ সিংহ রায়, মহম্মদপুর :মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের খর্দ্দফুলবাড়ী গ্রাম-নিঃশব্দ গ্রামীণ প্রান্তর, চারদিকে সবুজের সমারোহ।সেই গ্রামেই নিবিড় যত্নে গড়ে উঠেছে এক শিক্ষকের ভিন্ন স্বপ্নের কুলের বাগান।উপজেলার বনগ্রাম সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো.শরাফাতুল আলম নিজ উদ্যোগে বাড়ির আঙিনায় মমতামাখা শ্রম আর দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি দিয়ে ৭৫ শতক জমিতে ২০০টি বিভিন্ন জাতের কুলবরই গাছ রোপণ করেন।আজ তার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেয়েছে-চোখে পড়ার মতো সাফল্য এনে দিয়েছে তাকে।

কালের ধুলোমাখা গ্রামবাংলার পথ পেরিয়ে পৌঁছালে দেখা মেলে পরিপাটি কুলের বাগান।গাছের ডালে ডালে ঝুলে থাকা টসটসে কুল যেন প্রকৃতির নিজস্ব অলংকার। লাল-সবুজের মায়াবী রং ঢেকে দেয় চারপাশ,বাতাসে ভেসে বেড়ায় ফলের সজীব গন্ধ। গ্রামের সাধারণ কৃষিজমিকে তিনি রূপ দিয়েছেন সম্ভাবনার পাঠশালায়।

জানা গেছে,তিনি বিভিন্ন জাতের উন্নতমানের কুলবরই চাষ শুরু করেন।নিয়মিত ও বৈজ্ঞানিক পরিচর্যায় বাগানে এসেছে আশাব্যঞ্জক ফলন।

শুধু ফল নয়,এই বাগান এখন অনেকের স্বপ্নের আশ্রয়,প্রেরণা আর সাহসের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে শিক্ষক মো. শরাফাতুল আলম বলেন,করোনা কালীন সময় থেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাড়ির পাশে নিজস্ব জমিতে কুল চাষ শুরু করেন তিনি।প্রতিবছর ব্যয় বাদ দিয়েও ভালো পরিমাণ লাভ পান বলে জানান। বর্তমানে তার বাগানে ভারত সুন্দরী, বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি জাতের কুল এসেছে।এরমধ্যে চলতি ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে ভারত সুন্দরী জাতের কুল তোলা শুরু হয়েছে,পর্যায়ক্রমে অন্য জাতের কুলও বাজারে আসবে।

তিনি বলেন,“কুল এমন একটি ফল যা শীত মৌসুমে হারভেস্টিং হয়।আর এই বাগানে এলেই টেনশনমুক্ত হয়ে অনেক আনন্দে সময় কাটানো যায়। আমার বাগানের ফল খেয়ে হাজারো পাখিরও খাদ্যের জোগান হয়।

তার ভাষায়-“মাটির সাথে হৃদয়ের সম্পর্ক তৈরি করলে ফসলও ভালোবাসা দিয়ে জবাব দেয়।একটু সাহস,একটু ধৈর্য আর সঠিক পরিচর্যা-এই তিনেই গ্রামের মাটি বদলে দিতে পারে মানুষের ভাগ্য। ভবিষ্যতে তিনি আরও বৃহৎ পরিসরে বাগান সম্প্রসারণ এবং উন্নতমানের চারা উৎপাদনের পরিকল্পনাও করছেন।

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়নের খর্দ্দফুলবাড়ীর এই সবুজ কুলের বাগান এখন শুধুই এক শিক্ষকের ব্যক্তিগত সাফল্য নয়,এটি পুরো এলাকার সম্মিলিত প্রত্যাশা,স্বপ্ন ও সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি।প্রকৃতির কোলে মানুষের শ্রমে এমনই ফুটে ওঠে জীবনের সুন্দর গল্প।

(বিএসআর/এএস/ডিসেম্বর ২৭, ২০২৫)