প্রচ্ছদ » পাঠকের লেখা » বিস্তারিত
বেগম জিয়ার মৃত্যু এবং কিছু কথা
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১৮:১৮:৩৯
শিতাংশু গুহ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। বেগম জিয়ার মৃত্যুতে তাঁর দল ও দেশের ক্ষতিবৃদ্ধি নিয়ে এ আলোচনা। এটি আমার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অভিমত। আমি তাঁর রাজনৈতিক উত্থান-পতন দেখেছি। তবে আমি কখনো তার সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষাৎ করিনি, যদিও ৮০-র দশকে বিরোধী দলীয় আন্দোলনে জাতীয় প্রেসক্লাবে,ও ঢাকার রাস্তায় শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়াকে বহুবার খুব কাছাকাছি থেকে দেখেছি, কথা শুনেছি। ঐসময় দুই নেত্রীকে একসাথে বসানোর বহুপ্রচেষ্টা ছিলো, দু’জনই তখনো এতটা জাঁদরেল নেত্রী ছিলেন না, তদুপরি প্রেসক্লাবে তাঁদের আসতেই হতো। সেই তখনই আমার কাছে শেখ হাসিনাকে অনেকটা বাঙ্গালীর ‘বড় বোন’ এবং খালেদা জিয়াকে দাম্ভিক, উন্মাষিক মনে হতো।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রথম সামরিক শাসক, তাঁর পত্নী হিসাবে বেগম জিয়াকে মানুষ তখন থেকে জানতে শুরু করে, যদিও ঠিক ততটা জনসমক্ষে তার পদচারণা ছিলোনা। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফেরেন। জিয়া হত্যা একই সালে, ১৯৮১। এরপর ধীরে ধীরে বেগম জিয়ার রাজনীতিতে পদার্পন। জিয়া নিহত হবার পর স্বাভাবিক ভাবেই বিএনপি ও খালেদা জিয়ার প্রতি মানুষের সহানুভূতি ছিলো। ঐসময় বিচারপতি আব্দুস সাত্তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হ’ন। ক’মাসের মধ্যেই হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করেন। প্রকাশ্য দিবালোকে, অনেকটা আগেভাগে বলে-কয়েই এরশাদ বিনা-রক্তপাতে ক্ষমতা নেন। ইতোপূর্বে দু’জন প্রেসিডেন্ট নিহত হ’ন, সেই প্রথম জাতি বিনা-রক্তপাতে একজন প্রেসিডেন্টের অপসারণ দেখলো।
ক্ষমতা দখলের আগে এরশাদ তার বন্ধু নাজিউর রহমান মঞ্জুর বাসায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সাথে বৈঠকে মিলিত হ’ন। সম্ভবত: এরশাদের ক্ষমতা দখলে শেখ হাসিনা’র ‘সবুজ সংকেত’ ছিলো। বেগম জিয়া তখনো রাজনীতিতে নবাগত, তেমন কিচ্ছুই বোঝেন না, অবশ্য তাঁর ব্যক্তিত্ব প্রখর ছিলো। যারা তাকে পরামর্শ দিতেন তাঁরা ভালো পরামর্শই দিতেন, এবং তিনি তা শুনতেন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তিনি ‘আপোষহীন’ নেত্রী উপাধি পান, অর্থাৎ তার সমর্থকরা তাকে ওই সম্মানের আসনে বসান। এ ঘটনাটি ঘটে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনের আগে। ঐসময় এরশাদ বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে, শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে ১৫দল, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ৭দল সমান্তরালভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছিলো। জামাত প্রসঙ্গ আনলাম না। এটি ছিলো ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলন।
নির্বাচন এলে প্রশ্ন উঠলো, ১৫/৭ দলীয় জোট কি অংশ নেবে? এনিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট অনেকগুলো মিটিং করে। শেষ বৈঠকটি গভীর রাত পর্যন্ত চলে, সকল পক্ষ নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন, এবং পরদিন তা মিডিয়ায় জানিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়। পরদিন ১৫-দল সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেয় যে তাঁরা নির্বাচনে অংশ নেবে। ৭-দল এখানে ‘বিশ্বাসঘাতকা’ করে, এবং জানিয়ে দেয় যে, তারা নির্বাচনে যাবেনা। এ ঘটনার পর বেগম জিয়া আপোষহীন নেত্রী হয়ে যান? এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে ১৫ দল এগিয়ে ছিলো। ১৯৮৮-তে ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়, এরপর আন্দোলন তীব্রতর হয়, এরশাদের পতন ঘটে। ১৯৯১-র নির্বাচনে সবাই ধারণা করে নিয়েছিলো যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসছে।
সেটি ঘটেনি, নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হয়। শেখ হাসিনা সূক্ষ্ণ কারচুপি’র অভিযোগ তুলেন, কিন্তু ফলাফল মেনে নেন। ঐসময় নির্বাচনের ফলাফল হতো সামান্য ব্যবধানে, এটি ঠিক যে তখনো বিএনপি’র পক্ষে কিছুটা প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ছিলো। খালেদা জিয়া প্রথমবারের মত প্রধানমন্ত্রী হন। শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেত্রী। ১৯৮৬’র নির্বাচনে জাতীয় পার্টি বিজয়ী হলে শেখ হাসিনা প্রথম বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসাবে ক্ষমতার স্বাদ পান। এরশাদ পতন আন্দোলনকালে সবাই মিলে রাষ্ট্রপতি শাসন থেকে মন্ত্রী-পরিষদ শাসিত সরকার পদ্ধতিতে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়, যা আমার ধারণায় বেগম জিয়ার জীবনে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভুল। কারণ ব্যক্তি খালেদা জিয়া তার সময়ে যেকোন রাজনীতিকের চেয়ে জনপ্রিয় ছিলেন। প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচন করলে তার পরাজিত হবার সম্ভবনা কম ছিলো। ব্যক্তি হিসাবে তিনি কোন নির্বাচনে পরাজিত হ’ননি।
১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়া মোটামুটিভাবে ভালোই দেশ চালালেও শেষদিকে ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার জন্যে একটি ‘ক্যু’ ঘটানোর প্রচেষ্টা চালান, সেটি ব্যর্থ হয়। খালেদা জিয়া একতরফা নির্বাচন করে জয়ী হ’ন। ১৫ই ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬’র নির্বাচনটি খালেদা জিয়ার জন্যে একটি কলংক। মাগুড়া নির্বাচন আর একটি কলঙ্ক। আওয়ামী লীগ আন্দোলন গড়ে তুলে। তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। পুন্: নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হ’য়। শেখ হাসিনা প্রথমবারের মত প্রধানমন্ত্রী (১৯৯৬) হ’ন, খালেদা জিয়া বিরোধী দলে বসেন। আওয়ামী লীগ সরকার দেশ ভালই চালায়। ২০০১-এ নির্বাচনে আওয়ামী পরাজিত হয়, বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় বসে, খালেদা জিয়া আবার প্রধানমন্ত্রী হ’ন। এ নির্বাচনে বিজয়ের পর বিএনপি ব্যাপকভাবে হিন্দু নির্যাতন করে, যা রেকর্ড। আওয়ামী লীগের কর্মীরাও নির্যাতিত হয়?
পুনরায় ২০০৬-এ খালেদা জিয়া ক্ষমতা ছাড়তে চাইলেন না, আবার আন্দোলন। ২০০৭-২০০৮ সেনা-সমর্থিত ফখরুল-মঈন সরকার তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা হয়, এবং তাদের সময়ে এ দুই বছর দেশ খুবই সুন্দরভাবে চলে। ২০০৯-এ আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হ’ন। খালেদা জিয়া বিরোধী দলীয় নেত্রী। মূলত: ২০০১ থেকেই খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক পতন শুরু হয়, ২০০৯-২০২৪ পর্যন্ত এ ব্যর্থতা প্রকটরূপ ধারণ করে। শেখ হাসিনা এ সময় যেকোন মূল্যে ক্ষমতায় থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন, এবং পরপর তিনটি নির্বাচন ছিনিয়ে নেন। এ সময় খালেদা জিয়াকে অনাথ আশ্রমের মামলায় সাঁজা দেয়া হয়, যা মোটামুটিভাবে অন্যায় ছিলো, এজন্যে ২০২৪-এ শেখ হাসিনা’র পতনের পর সজীব ওয়াজেদ জয় ‘দু:খ’ প্রকাশ করেছেন।
মূলত: শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার মধ্যকার ব্যক্তিগত দ্বন্ধ দেশ ও রাজনীতির জন্যে যথেষ্ট ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। দুই দলই চাইতো তারা ক্ষমতায় না থাকলে সেনাবাহিনী থাকুক। খালেদা জিয়ার ক্ষমতা না ছাড়ার প্রবণতা দেশকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে, এবং শেখ হাসিনাকে উৎসাহিত করেছে ক্ষমতা ধরে রাখতে। শেখ হাসিনা’র জন্যে যে গর্ত খালেদা জিয়া খনন করেছিলেন, ক্ষমতায় গিয়ে শেখ হাসিনা সেই গর্তেই খালেদা জিয়াকে ফেলে দেন্। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার কাছে দেশ গণতন্ত্র প্রত্যাশা করেছিলো, দুইনেত্রীই তা দিতে ব্যর্থ হ’ন এবং তাদের জন্যে বুকেপিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লিখে ‘নূর-হোসেন’ আত্মাহুতি দিয়েছিলো, দুই নেত্রী নূর-হোসেনের সাথে বেঈমানী করেছেন, কেউই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সৎ ছিলেন না।
কথায় বলে, ‘শেষ ভাল যার, সব ভাল তার’। খালেদা জিয়ার শেষটা তারজন্যে ভাল সময়ে হয়েছে। ইউনুস সরকারের গুডবুকে আছে বিএনপি ও খালেদা জিয়া। সরকার খালেদা জিয়ার সাথে যথেষ্ট ভাল ও সম্মানজনক আচরণ করছে। বিএনপি যখন ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবীতে আন্দোলনে নামছিলো, ঠিক তখনই খালেদা জিয়া-তারেক জিয়া তাতে জল ঢেলে দেন্। সামনের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় না গেলে এ পদক্ষেপটি নেতিবাচক হিসাবে বিবেচিত হবে। খালেদা জিয়া ‘সোয়া দুইবার’ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এবং কোনবার ক্ষমতা ছাড়তে চাননি। খালেদা জিয়ার সাফল্য খুঁজতে গিয়ে আমি হয়রান হয়ে গেছি, কিছু খুঁজে পাইনি? তিনি ছিলেন দেশের তাবৎ সন্ত্রাসী, মৌলবাদী, ধর্মান্ধ, স্বাধীনতা বিরোধী ও পাকিস্তান পন্থীদের ‘নয়নের মনি’। মৌলবাদের উত্থানে সহায়তা করা এবং ভারত বিরোধিতা উস্কে দেয়া তার সাফল্য বটে।
২১শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলার পর বেগম জিয়া বলেছিলেন যে, ‘শেখ হাসিনা ভ্যানিটি ব্যাগে ভরে গ্রেনেড নিয়ে গিয়ে নিজেই ফুটিয়েছেন’। অনেক মৃত্যু’র জন্যেই তিনি দায়ী। বেগম জিয়ার আমলে বাংলাদেশ পরপর ৫বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। সমগ্র বাংলাদেশে একসাথে বোমা ফুটেছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র এসেছে। হাওয়া ভবন সৃষ্টি হয়েছে। মাগুরা নির্বাচন জাতিকে লজ্জা দিয়েছে। ১৯৯৬’র ১৫ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বেগম জিয়ার ক্ষমতা লিপ্সার বহি:প্রকাশ। ২০০১-এ হিন্দু নির্যাতন রেকর্ড। লোগাং হত্যাকান্ড তিনি ঘটিয়েছেন। ৫টি জন্মদিন উপহার দিয়েছেন। তিনি ছিলেন ক্ষমতালোভী। ১৫ই আগষ্ট জন্মদিন বলে কেক-কাটা প্রহসন তিনি বারবার করেছিলেন। কিছু তোষামোদকারী তাঁকে ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসী’ বলতে চান, তাকে ‘মাদার অফ মৌলবাদ’ বলা যায়, এবং এর পিতা হচ্ছেন জেনারেল জিয়া। ১৯৭১ সালে বেগম জিয়ার ভূমিকা অস্পষ্ট এবং তা কোনভাবেই স্বাধীনতার সপক্ষে ছিলোনা।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিএনপি লাভবান হবে না ক্ষতিগ্রস্থ হবে তা বলা শক্ত। কারো কারো মতে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। জামাত লাভবান হবে। এতে কি নির্বাচন পিছিয়ে যাবে? মনে হয়না। তারেক জিয়া দেশে ফিরেছেন, তিনি দলের নিয়ন্ত্রণ ঠিকমত ধরতে না পারলে দল বিভক্ত হবে। জিয়া নিহত হবার দিন বা ঐসময়টা আমি ঢাকা শহরে থাকতাম, জিয়ার জানাজা আমি দেখেছি, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে সেটিই সর্ববৃহৎ জানাজা। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে সেই রেকর্ড ভেঙ্গে যাবে বলে মনে হয়। এ সময়ে বাংলাদেশ ধর্মান্ধ শক্তিতে ভরপুর তাই তার জানাজায় প্রচুর লোক হওয়া স্বাভাবিক। জিয়ার মৃত্যু’র পর যেমনটা হয়েছে, ঠিক তেমনি বেগম জিয়ার মৃত্যু’র পর বিএনপি’র পক্ষে মানুষের সহানুভূতি থাকবে, এবং ফেব্রুয়ারীতে নির্বাচনটি হলে বিএনপি লাভবান হবে! বাংলাদেশে লাশ নিয়ে রাজনীতি নুতন নয়, সর্বশেষ জাতি পুলিশের লাশ নিয়ে রাজনীতি দেখেছে, বেগম জিয়ার লাশ নিয়েও রাজনীতি হবে, তবে সেটা সৌজন্যের মধ্যে থাকাটা সমীচীন। কেউ কেউ বলছেন, বেগম জিয়া আরো আগেই মারা গেছেন, এতদিন তার মরদেহ নিয়ে রাজনীতি হয়েছে। এই একটি মন্তব্য থেকে ড. ইউনুস সরকারের প্রতি মানুষের ‘আস্থা’ মাপটা বেশ সহজ হয়ে গেছে। বেগম জিয়ার সঠিক জন্মদিন কোনটি যেমন জাতি জানেনা, ঠিক তেমনি হয়তো তার মৃত্যু দিন নিয়েও ভবিষ্যতে সংশয় সৃষ্টি হবে?
বাংলাদেশে আজকের যে দুরাবস্থা, অর্থাৎ ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর রমরমা, এজন্যে পঁচাত্তর পরবর্তী সব ক’টি সরকার দায়ী। এর শুরুটা করেছেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। তিনি ছিলেন খলনায়ক, যে জাতি একজন খোলনায়ককে ‘নায়কের’ মর্যাদায় বসায় এর কপালে দু:খটা স্বাভাবিক। বেগম জিয়া একজন খলনায়কের পত্নী, স্বামীর উত্তরসূরি হিসাবে তার রাজনীতিতে পদার্পন, তিনি জিয়ার লিগ্যাসী বহন করেছেন মাত্র। বাংলাদেশের ৯০ পরবর্তী রাজনীতিতে দুর্নীতিকে আস্কারা দেয়া এবং ক্ষমতা ধরে রাখার অপচেষ্টা তিনি করেছেন স্বামীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে। পুত্র কোকো’র মৃত্যু’র পর শেখ হাসিনাকে তিনি তার বাড়িতে ঢুকতেও দেননি। খালেদা জিয়া তার পাপের শাস্তি হিসাবে শেখ হাসিনা’র আমলে জেল খেটেছেন। তার মৃত্যুতে জাতির কোন ক্ষতিবৃদ্ধি নেই। তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, পরপারে তিনি ভাল থাকুন।
খালেদা জিয়ার মৃত্যু’র মধ্য দিয়ে প্রকৃতি’র নিয়মে ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা কার্যকর হতে চলেছে। একজন পরপারে, অন্যজন দেশান্তরে। দুই নেত্রীকে গালাগালি করা যেতেই পারে, কিন্তু এরপর যারা আসছেন, তারা তো জঘন্য। তবু বাংলাদেশে পুনরায় এমনতর ‘দুইনেত্রী’ সৃষ্টি হোক তা কাম্য নয়। পারিবারিক শাসন কায়েম হোক তাও কাম্য নয়! বেগম জিয়া অধ্যায় শেষ। শেখ হাসিনা’র শেষটা কি হবে? উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ ভোরে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন।
লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।
