প্রচ্ছদ » স্বাস্থ্য » বিস্তারিত
তুলসী পাতার ভেষজ গুণ
২০১৫ সেপ্টেম্বর ১২ ১৫:৫৪:০০
নিউজ ডেস্ক : তুলসী একটি ঔষধি গাছ। তুলসী অর্থ যার তুলনা নেই। সুগন্ধিযুক্ত, কটু তিক্তরস, রুচিকর। এটি সর্দি, কাশি, কৃমি ও বায়ুনাশক এবং মুত্রকর, হজমকারক ও এন্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে বিশেষ করে কফের প্রাধান্যে যে সব রোগ সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে তুলসী বেশ ফলদায়ক। অন্যান্য স্থানীয় নাম : Common basil, Manjari বা Krishna tulsi. বৈজ্ঞানিক নাম: Ocimum basilicum Linn পরিবার: Libiatae. চলুন জেনে নেয়া যাক তুলসী পাতা সম্পর্কে :
* পেট খারাপ হলে তুলসীর ১০-১২টা পাতা সামান্য জিরার সঙ্গে পিষে ৩-৪ বার খান।
* জ্বর হলে পানির মধ্যে তুলসী পাতা, গোল মরিচ এবং মিশ্রী মিশিয়ে ভাল করে সেদ্ধ করুন। অথবা তিনটি দ্রব্য মিশিয়ে বড়ি তৈরি করুন। দিনের মধ্যে তিন-চার বার ঐ বড়িটা খান। জ্বর খুব তাড়াতাড়ি সেরে যাবে।
* কাশি যদি না কমে সেই ক্ষেত্রে তুলসী পাতা এবং আদা পিষে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান। এতে উপকার পাবেন।
* মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে ৪/৫ বার তুলসী পাতা চেবান।
* ঘা যদি দ্রুত কমাতে চান তাহলে তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসঙ্গে পিষে ঘায়ে লাগান কমে যাবে।
* শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগান এতে জ্বালা কমবে। পোড়া জায়গাটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে। সেখানে কোন দাগ থাকবে না।
* ত্বকের চমক বাড়ানোর জন্য এছাড়া ত্বকের বলীরেখা এবং ব্রন দূর করার জন্য তুলসী পাতা পিষে মুখে লাগান।
* চর্মরোগে তুলসী পাতা দূর্বাঘাসের ডগার সংগে বেটে মাখলে ভালো হয়ে যায়।
* যদি কখনও বমি কিংবা মাথা ঘোরা শুরু করে, তাহলে তুলসী রসের মধ্যে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
* সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে রস পান করলে খাবার রুচি বাড়ে।
* নিয়মিত তুলসীর রস পানে হৃদরোগেও উপকার পাওয়া যায়।
* চোখের সমস্যা দূর করতে রাতে কয়েকটি তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ওই পানি দিয়ে সকালে চোখ ধুয়ে ফেলুন।
* বুদ্ধি এবং স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন ৫-৭ টা তুলসী পাতা চিবান।
* প্রস্রাবে জ্বালা হলে তুলসী পাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন। উপকার পাবেন।
* ত্বকের সমস্যা দূর করতে তিল তেলের মধ্যে তুলসী পাতা ফেলে হালকা গরম করে ত্বকে লাগান।
* তুলসী মূল শুক্র গাঢ় কারক। তুলসী পাতার ক্বাথ, এলাচ গুঁড়া এবং এক তোলা পরিমাণ মিছরী পান করলে ধাতুপুষ্টি সাধিত হয় যতদিন সম্ভব খাওয়া যায়। এটি অত্যন্ত ইন্দ্রিয় উত্তেজক। প্রতিদিন এক ইঞ্চি পরিমাণ তুলসী গাছের শিকড় পানের সাথে খেলে যৌনদুর্বলতা রোগ সেরে যায়।
* কোন কারণে রক্ত দূষিত হলে কাল তুলসি পাতার রস কিছুদিন খেলে উপকার পাওয়া যায়। শ্লেষ্মার জন্য নাক বন্ধ হয়ে কোনো গন্ধ পাওয়া না গেলে সে সময় শুষ্ক পাতা চূর্ণের নস্যি নিলে সেরে যায়। পাতাচূর্ণ দুই আঙ্গুলের চিমটি দিয়ে ধরে নাক দিয়ে টানতে হয়, সেটাই নস্যি।
* তুলসী পাতা দিয়ে চায়ের মত করে খেলে দীর্ঘদিন সুস্থ থাকা যায়। তুলসী চা হিসাবে এটি বেশ জনপ্রিয়। পানি ফুটলে কয়েকটা তুলশী পাতা দিন। এরপর চাপাতা দিয়ে ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে চিনি মিশিয়ে খান। হয়ে গেল তুলশী চা।
* তুলসি পাতার রসে লবন মিশিয়ে দাদে লাগালে উপশম হয়।
* তুলসীর বীজ পানিতে ভিজালে পিচ্ছিল হয়। এই পানিতে চিনি মিশিয়ে শরবতের মত করে খেলে প্রস্রাবজনিত জ্বালা যন্ত্রণায় বিশেষ উপকার হয়। এছাড়াও তুলসী পাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন ।
* মুখে বসন্তের কাল দাগে তুলসীর রস মাখলে ঐ দাগ মিলিয়ে যায়। হামের পর যে সব শিশুর শরীরে কালো দাগ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে তুলসী পাতার রস মাখলে গায়ে স্বাভাবিক রং ফিরে আসে।
(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫)